আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে বিশাল মিঠা পানির ভান্ডার আবিষ্কৃত

সম্পাদনা করেছেন: Tetiana Martynovska 17

আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে বিশাল, অব্যবহৃত মিঠা পানির ভান্ডার আবিষ্কার করেছে, যা বিশ্বব্যাপী জল সংকট মোকাবেলায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। এই গবেষণাটি এই বছরের মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পরিচালিত একটি অভিযানের ফলাফল। বিজ্ঞানীরা কেপ কডের কাছে প্রায় ৪০০ মিটার সমুদ্রতলের গভীরে খনন করে এই অভূতপূর্ব আবিষ্কারটি করেন। তেল উত্তোলনে ব্যবহৃত একটি প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে তারা অত্যন্ত কম লবণাক্ততার হাজার হাজার লিটার মিঠা পানি উত্তোলন করতে সক্ষম হন।

প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, এই নতুন আবিষ্কৃত ভান্ডারটি নিউ ইয়র্ক সিটিকে কয়েক শতাব্দী ধরে মিঠা পানি সরবরাহ করতে পারবে। বিশ্ব জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে মিঠা পানির উৎস ক্রমশ কমে আসছে, তাই এই বিশাল সমুদ্রতলের মিঠা পানির ভান্ডারটি বিদ্যমান উৎসগুলির উপর চাপ কমাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে। ভূ-পদার্থবিদ ব্র্যান্ডন ডুগান, যিনি এই অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন, তিনি বলেছেন, "পৃথিবীতে মিঠা পানি খুঁজে পাওয়ার এটি শেষ স্থানগুলির মধ্যে একটি।" জাতিসংঘ পূর্বাভাস দিয়েছে যে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী মিঠা পানির চাহিদা সরবরাহের চেয়ে ৪০% বেশি হবে। এই আবিষ্কারটি ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে একটি আশাব্যঞ্জক পথ দেখায়, বিশেষ করে সেই শহরগুলির জন্য যা ইতিমধ্যেই তীব্র পানি সংকটের সম্মুখীন।

এই আবিষ্কারটি কেবল একটি বিশাল মিঠা পানির উৎসই উন্মোচন করেনি, বরং এটি জল সংকট মোকাবেলায় নতুন প্রযুক্তির সম্ভাবনাও তুলে ধরেছে। প্রায় ৫০ বছর আগে, ১৯৭০-এর দশকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি জাহাজ তেল ও গ্যাসের সন্ধানে আটলান্টিকের তলদেশে খনন করার সময় অপ্রত্যাশিতভাবে মিঠা পানির সন্ধান পেয়েছিল। সেই প্রাথমিক আবিষ্কারের উপর ভিত্তি করে, এক্সপিডিশন ৫০১ নামের একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা অভিযান এই গ্রীষ্মে কেপ কডের কাছে এই পানির উৎসটি আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান করে।

এই অভিযানের মাধ্যমে প্রায় ৫০,০০০ লিটার পানি সংগ্রহ করা হয়েছে, যা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন গবেষণাগারে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এই পানি বরফ যুগ থেকে এসেছে নাকি স্থলভাগের ভূগর্ভস্থ পানির সাথে সংযুক্ত, তা নিয়ে গবেষণা চলছে। এই বিশাল মিঠা পানির ভান্ডারটি New Jersey থেকে Maine পর্যন্ত বিস্তৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং এটি Ice Age-এর সময় গঠিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে এই ধরণের ভান্ডার বিশ্বের অন্যান্য উপকূলীয় অঞ্চলেও থাকতে পারে।

তবে, এই জল উত্তোলন এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত, পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সমুদ্রতলের বাস্তুতন্ত্রের উপর এর প্রভাব এবং জলের মালিকানা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এই আবিষ্কারটি জল সংকট মোকাবেলায় একটি নতুন আশার আলো দেখালেও, এর পূর্ণ সদ্ব্যবহারের জন্য আরও গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজন।

উৎসসমূহ

  • УНІАН

  • Detailed Fact Checker — AICookbook.ai

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।