আন্টার্কটিকার বরফ গলার কারণে ৬৬ বছর পর ব্রিটিশ আবহাওয়াবিদের দেহাবশেষ উদ্ধার

সম্পাদনা করেছেন: Uliana S.

১৯৫৯ সালে আন্টার্কটিকার কিং জর্জ দ্বীপে একটি হিমবাহের ফাটলে পড়ে ব্রিটিশ আবহাওয়াবিদ ডেনিস 'টিঙ্ক' বেলের মৃত্যু হয়েছিল। দীর্ঘ ৬৬ বছর পর, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে, বরফ গলার কারণে তাঁর দেহাবশেষ এবং ব্যক্তিগত জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পোল্যান্ডের হেনরিক আরকটোস্কি গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা বেল-এর মৃত্যুর স্থানে এই আবিষ্কার করেন। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়, যা তাঁর পরিবারকে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শান্তি এনে দেয়। ডেনিস বেল, তখন মাত্র ২৫ বছর বয়সী, ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের (BAS) পূর্বসূরী ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ নির্ভর সার্ভে (FIDS)-এর একজন সদস্য ছিলেন। ১৯৫৯ সালের ২৬শে জুলাই, তিনি একটি সমীক্ষা ও ভূতাত্ত্বিক কাজের জন্য সহকর্মীদের সাথে একটি হিমবাহে আরোহণ করছিলেন। গভীর বরফের মধ্যে একটি লুকানো ফাটল, যা বরফের একটি পাতলা স্তর দিয়ে ঢাকা ছিল, সেখানে তিনি পড়ে যান। তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করার চেষ্টা করে, কিন্তু দড়ি ছিঁড়ে যাওয়ায় তিনি আবার ফাটলের গভীরে পড়ে যান এবং তাঁর মৃত্যু হয়। সেই সময় প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এবং আরও ফাটলের ঝুঁকির জন্য তাঁর দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের (BAS) পরিচালক জেন ফ্রান্সিস বলেন, ডেনিস বেলের মতো সাহসী ব্যক্তিরা চরম প্রতিকূলতার মধ্যে আন্টার্কটিকার প্রাথমিক বিজ্ঞান ও অনুসন্ধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। এই আবিষ্কার দীর্ঘদিনের একটি রহস্যের সমাধান করেছে এবং আন্টার্কটিকার বিজ্ঞানের ইতিহাসে মানুষের গল্পগুলির কথা মনে করিয়ে দেয়। কিং জর্জ দ্বীপের একটি স্থান তাঁর সম্মানে 'বেল পয়েন্ট' নামে নামকরণ করা হয়েছে। আন্টার্কটিকার জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বরফ দ্রুত গলে যাচ্ছে, যা এই ধরনের ঐতিহাসিক আবিষ্কারের পথ খুলে দিচ্ছে। এই ঘটনাটি মেরু অঞ্চলের অনুসন্ধানের ঝুঁকি এবং সেখানে বিজ্ঞানীদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। হেনরিক আরকটোস্কি গবেষণা কেন্দ্র, যা ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেটি আন্টার্কটিকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা কেন্দ্র, যেখানে মেরু অঞ্চলের পরিবেশ, জীববিদ্যা এবং জলবায়ু নিয়ে গবেষণা করা হয়। এই আবিষ্কারটি আন্টার্কটিকার পরিবেশগত পরিবর্তনের উপরও আলোকপাত করে, কারণ যে স্থানে ডেনিস বেলের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে, বরফ গলার কারণে সেই স্থানটিরও পরিবর্তন হয়েছে।

উৎসসমূহ

  • Monitorul de Galaţi

  • British Antarctic Survey

  • ABC News

  • Sky News

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।