হোয়াইট স্টর্ক প্রোজেক্ট ২০২৩ সালে তাদের সবচেয়ে সফল প্রজনন ঋতু উদযাপন করেছে, যেখানে অক্সফোর্ডশায়ারের কটসওল্ড ওয়াইল্ডলাইফ পার্কে ৪৮টি সারস শাবক সফলভাবে বড় হয়েছে। এই সাফল্য ২০১৬ সালে প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে পূর্বের সমস্ত রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। এই সম্মিলিত সংরক্ষণ প্রচেষ্টা দক্ষিণ ইংল্যান্ডে সাদা সারসদের পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে কাজ করছে।
প্রকল্পের সূচনা থেকে ২০০টিরও বেশি তরুণ সারস পাখি ছাড়া হয়েছে, যাদের যাত্রাপথ ইউরোপ এবং আফ্রিকা পর্যন্ত ট্র্যাকারের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সারস শাবকদের প্রায় ৩৫ দিন ধরে সারোগেট পিতামাতার মতো যত্ন নেওয়া হয়। একবার তারা যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে উঠলে, তাদের বন্য পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হয় এই আশায় যে তারা ব্রিটেনে ফিরে এসে প্রজনন করবে। সাদা সারসদের প্রত্যাবর্তন পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা পোকামাকড় এবং ছোট প্রাণীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তাদের এই পুনরুত্থান সংরক্ষণ অংশীদারিত্ব এবং আবাসস্থল পুনরুদ্ধারের শক্তির প্রমাণ।
২০২৪ সালে, প্রকল্পটি কটসওল্ড ওয়াইল্ডলাইফ পার্ক থেকে ৩৩টি সারস পাখি পশ্চিম সাসেক্সে ছেড়েছিল, যার মধ্যে ছয়টি নভেম্বরের মধ্যে মরক্কোতে নিশ্চিত করা হয়েছিল। এটি যুক্তরাজ্যে এই প্রজাতির পুনঃপ্রবর্তনে প্রকল্পের সাফল্য তুলে ধরে। প্রকল্পের এই সাফল্য আরও বন্যপ্রাণী পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাকে অনুপ্রাণিত করেছে, যার মধ্যে গ্রেটার লন্ডনে সাদা সারস প্রবর্তনের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সিটিজেন জু এই উদ্যোগের জন্য সম্ভাব্য আবাসস্থল এবং সম্প্রদায়িক সম্পৃক্ততা মূল্যায়ন করছে।
ঐতিহাসিকভাবে, ১৪১৬ সালে এডিনবার্গের একটি ক্যাথেড্রালের ছাদে বাসা বাঁধার পর থেকে ব্রিটেনে সাদা সারসদের শেষ প্রজনন জুটি দেখা গিয়েছিল। এই প্রকল্পটি কেবল একটি প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনছে না, বরং এটি পরিবেশ পুনরুদ্ধারের একটি প্রতীক হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই সারসদের প্রত্যাবর্তন যুক্তরাজ্যের পরিবেশগত স্বাস্থ্যের একটি ইতিবাচক সূচক। তারা কেবল তাদের নিজস্ব বাস্তুতন্ত্রেই নয়, বরং অন্যান্য প্রজাতির জন্যও সহায়ক, কারণ তাদের বড় বাসাগুলি অন্যান্য অনেক পাখির জন্য আবাসস্থল তৈরি করে। যেমন, চড়ুই এবং স্টার্লিং পাখি প্রায়শই তাদের বাসায় আশ্রয় নেয়।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে, সাদা সারসদের কেবল তাদের ঐতিহাসিক আবাসস্থলে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে না, বরং এটি যুক্তরাজ্যের শহর ও গ্রামাঞ্চলে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সংযোগ স্থাপনের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। লন্ডনের মতো শহরাঞ্চলে এদের পুনঃপ্রবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা চলছে, যা এই পাখিদের জন্য নতুন আবাসস্থল তৈরি এবং পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হবে।