বিজ্ঞান জাদুঘরে 'স্কিন: লিভিং আর্মার, ইভোলভিং আইডেন্টিটি' শীর্ষক একটি নতুন প্রদর্শনী শুরু হয়েছে, যা বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর চামড়ার বৈচিত্র্যময় কার্যাবলী অন্বেষণ করে। ক্যালিফোর্নিয়া একাডেমি অফ সায়েন্সেস দ্বারা নির্মিত এই প্রদর্শনীটি প্রাণীদের অভিযোজন সম্পর্কে এক অনন্য অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। দর্শনার্থীরা জানতে পারবেন কীভাবে চামড়া বিভিন্ন প্রাণীর সুরক্ষা, ছদ্মবেশ এবং যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এর মধ্যে একটি কালো গণ্ডারও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ইন্টারেক্টিভ ডিসপ্লেগুলির মাধ্যমে দর্শনার্থীরা চামড়ার সংবেদী ক্ষমতা, যেমন তাপমাত্রা এবং স্পর্শ অনুভব করার অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারবেন। এই প্রদর্শনীটি প্রায় ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এবং এটি বিশ্বমানের গবেষণা সংগ্রহ থেকে প্রাপ্ত অসংখ্য বৈজ্ঞানিক নমুনা প্রদর্শন করে।
প্রদর্শনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো মানুষের চামড়ার রঙ এবং এর সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা। ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং ডায়োরামার মাধ্যমে এটি তুলে ধরেছে যে কীভাবে চামড়ার রঙের ধারণা মানুষের পরিচয় এবং সামাজিক কাঠামোকে প্রভাবিত করেছে। বিশেষ করে, 'কালার অ্যান্ড কালচার' বিভাগে ইতিহাস ও বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বর্ণবাদ, কুসংস্কার এবং বৈষম্যের মতো বিষয়গুলি উপস্থাপন করা হয়েছে। এই প্রদর্শনীটি মানুষের ত্বকের রঙের বৈচিত্র্য এবং এর পিছনের জেনেটিক্স সম্পর্কে গভীর ধারণা দেয়।
প্রাণীজগতে চামড়ার অভিযোজন এক বিস্ময়কর বিষয়। সরীসৃপের আঁশ, পাখির পালক এবং স্তন্যপায়ী প্রাণীর লোম সবই চামড়ার অভিযোজিত রূপ, যা তাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে এবং টিকে থাকতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যাঙ এবং টোডদের ত্বক তাদের আধা-জলজ জীবনের জন্য বিশেষভাবে অভিযোজিত, যা তাদের শ্বাস নিতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, উট তার ঘন লোম ব্যবহার করে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, যা তাদের মরুভূমির চরম তাপমাত্রায় টিকে থাকতে সাহায্য করে। এই প্রদর্শনীতে একটি বিরল কালো গণ্ডারের নমুনাও রয়েছে, যা তার পুরু চামড়া এবং শিং-এর মাধ্যমে টিকে থাকার জন্য অভিযোজিত হয়েছে, যদিও এটি বর্তমানে বিপন্ন।
প্রদর্শনীটি কেবল বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি মানুষের চামড়ার রঙের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব নিয়েও আলোচনা করে। এটি দেখায় যে কীভাবে চামড়ার রঙ ঐতিহাসিকভাবে মানুষের পরিচয় এবং সামাজিক কাঠামোকে প্রভাবিত করেছে এবং কীভাবে এই ধারণাগুলি পরিবর্তিত হয়েছে। এই প্রদর্শনীটি মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিকারী জাতিগত ধারণাগুলির বৈজ্ঞানিক ভিত্তিহীনতা তুলে ধরে এবং একটি ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়তার উপর জোর দেয়। এটি একটি বহু-সংবেদী এবং বহুভাষিক প্রদর্শনী, যা সকল বয়সের দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত।