কেনিয়া গণ্ডার সংরক্ষণে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। ২০১৪ সালে যেখানে কালো গণ্ডারের সংখ্যা ছিল মাত্র ৭৪৫, ২০২৪ সালে তা বেড়ে ১,০৫৯ হয়েছে। একইভাবে, সাদা গণ্ডারের সংখ্যাও ৫১৩ থেকে বেড়ে ১,০৪১ হয়েছে। এই ইতিবাচক অগ্রগতি নিবেদিত সংরক্ষণ উদ্যোগের কার্যকারিতা তুলে ধরে।
এই সাফল্যের পরেও, চোরাশিকার গণ্ডারের জনসংখ্যার জন্য একটি গুরুতর হুমকি হিসেবে রয়ে গেছে। ২০২৫ সালের মে মাসে, কেনিয়াতে ২.২ কেজি গণ্ডারের শিং সহ দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যার আনুমানিক মূল্য ছিল প্রায় ১৫,৪৪৪ মার্কিন ডলার। এই ঘটনা বন্যপ্রাণী কর্তৃপক্ষের মুখোমুখি হওয়া অবিরাম চ্যালেঞ্জগুলোকে তুলে ধরে।
কেনিয়ার বন্যপ্রাণী পরিষেবা (KWS) এবং অন্যান্য অংশীদাররা চোরাশিকার মোকাবিলা এবং এই বিপন্ন প্রাণীগুলির বেঁচে থাকা নিশ্চিত করার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। কালো গণ্ডার পুনরুদ্ধার ও কর্ম পরিকল্পনা (Black Rhino Recovery and Action Plan) এর মতো সংরক্ষণ কৌশলগুলি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা শক্তিশালীকরণ, আবাসস্থল সম্প্রসারণ এবং উন্নত পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। কেনিয়া সরকার ২০৩৭ সালের মধ্যে কালো গণ্ডারের সংখ্যা ২,০০০-এ উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য, কেনিয়া নতুন সংরক্ষণাগার স্থাপন এবং গণ্ডারের বিচরণ ক্ষেত্র সম্প্রসারণের উপর জোর দিচ্ছে, যা অতীতে তাদের আবাসস্থল ছিল। প্রযুক্তির ব্যবহার, যেমন ড্রোন নজরদারি এবং জিপিএস ট্র্যাকিং, গণ্ডারদের রক্ষা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। RFID চিপগুলি গণ্ডারের শিং-এ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে যা রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিংয়ের সুবিধা দেয়। এছাড়াও, এআই-চালিত ক্যামেরা ট্র্যাপগুলি প্রজাতি সনাক্ত করতে এবং সম্ভাব্য হুমকি সম্পর্কে রেঞ্জারদের সতর্ক করতে সক্ষম।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ কেনিয়ার গণ্ডার সংরক্ষণ প্রচেষ্টার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, যেমন সেভ দ্য রাইনো ইন্টারন্যাশনাল এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড, অর্থায়ন এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করেছে। স্থানীয় সম্প্রদায়গুলি ইকো-ট্যুরিজম এবং সংরক্ষণ সম্পর্কিত কাজের মাধ্যমে আয় রোজগারের সুযোগ পাচ্ছে, যা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে তাদের উৎসাহিত করছে।
যদিও সংখ্যা বৃদ্ধি একটি আশাব্যঞ্জক লক্ষণ, তবুও চোরাশিকার এবং আবাসস্থলের ক্ষতি গণ্ডারদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কেনিয়ার সরকার এবং সংরক্ষণ সংস্থাগুলি এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করতে এবং গণ্ডারদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই সম্মিলিত প্রচেষ্টাগুলি কেনিয়াকে আফ্রিকার গণ্ডার সংরক্ষণে একটি অগ্রণী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।