মাইকেল জ্যাকসনের 'বিলি জিন' চার্টে প্রত্যাবর্তন: কালজয়ী আবেদন অক্ষুণ্ণ

সম্পাদনা করেছেন: Olga Sukhina

মাইকেল জ্যাকসনের কালজয়ী গান 'বিলি জিন' আবারও সঙ্গীত জগতে তার প্রভাব বিস্তার করছে। ২০২৫ সালের ১৯শে আগস্টের তথ্য অনুযায়ী, গানটি বিলবোর্ডের R&B/হিপ-হপ স্ট্রিমিং সংগস চার্টে ২৩ নম্বরে পুনরায় স্থান করে নিয়েছে। এটি জ্যাকসনের জন্য এই নির্দিষ্ট চার্টে সপ্তম উপস্থিতি, যেখানে তার জীবদ্দশায় মাত্র দুটি গান এই তালিকায় স্থান পেয়েছিল। এই প্রত্যাবর্তন প্রমাণ করে যে কিং অফ পপের সঙ্গীত আজও শ্রোতাদের হৃদয়ে কতটা গভীর প্রভাব ফেলে।

'বিলি জিন' শুধু R&B/হিপ-হপ চার্টেই নয়, R&B স্ট্রিমিং সংগস তালিকাতেও ১২ নম্বরে উঠে এসেছে। বিশ্বব্যাপী শ্রোতাদের কাছে এর আবেদন এতটাই বেশি যে এটি বিলবোর্ড গ্লোবাল ২০০ চার্টে ৮৭ এবং বিলবোর্ড গ্লোবাল এক্সক্লুসিভ ইউএস চার্টে ৯৮ নম্বরেও স্থান করে নিয়েছে। জ্যাকসনের অন্যান্য গান, যেমন জাস্টিন টিম্বারলেকের সাথে 'লাভ নেভার ফেল্ট সো গুড' (৫ম স্থান), ড্রেক অভিনীত 'স্লেইভ টু দ্য রিদম' (৬ষ্ঠ স্থান) এবং 'ডোন্ট ম্যাটার টু মি' (৮ম স্থান) বিভিন্ন চার্টে শীর্ষ দশে নিজেদের স্থান ধরে রেখেছে, যা তার সঙ্গীতের দীর্ঘস্থায়ী জনপ্রিয়তারই সাক্ষ্য বহন করে।

'বিলি জিন'-এর এই নতুন করে চার্টে আসা কেবল একটি গানের প্রত্যাবর্তনই নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক ঘটনারও প্রতিফলন। গানটি শুধু তার সময়ের সঙ্গীতকেই প্রভাবিত করেনি, বরং সঙ্গীত ভিডিওর ধারণাকেও নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। স্টিভ ব্যারন পরিচালিত এই গানটির ভিডিও ছিল এমটিভি-তে প্রচারিত প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ শিল্পীর কোনো গান, যা সেই সময়ে বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী বার্তা দিয়েছিল। এটি জ্যাকসনকে বিশ্ব মঞ্চে এক নতুন পরিচিতি এনে দেয় এবং তার আইকনিক মুনওয়াক পারফরম্যান্স, বিশেষ করে মটউন ২৫ টেলিভিশন স্পেশালে, তাকে পপ সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত করে। এই গানটি কেবল তার সময়েরই নয়, বরং পরবর্তী দশকগুলোর সঙ্গীতকেও প্রভাবিত করেছে, যা "স্লীক, পোস্ট-সোল পপ মিউজিক" ধারার পথপ্রদর্শক হিসেবে বিবেচিত হয়।

শ্রোতাদের মধ্যে 'বিলি জিন'-এর এই অবিচল আবেদন কেবল এর সুর বা লিরিকের জন্যই নয়, বরং এর পেছনের গভীরতা এবং জ্যাকসনের অসামান্য পরিবেশনার জন্যও। গানটি তৈরি হয়েছিল জ্যাকসন এবং তার ভাইদের জ্যা como 5 হিসাবে ট্যুর করার সময় গ্রুপিদের অভিজ্ঞতা থেকে, যা এক ধরনের বাস্তবতার চিত্র তুলে ধরে। এই গানটি জ্যাকসনের জীবনে আসা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ এবং তার ব্যক্তিগত সংগ্রামেরও প্রতীক, যা তার পরবর্তী কাজগুলোতেও প্রতিফলিত হয়েছে।

বর্তমানে, পপ কিংবদন্তীর জীবন নিয়ে নির্মিত আসন্ন বায়োপিক 'মাইকেল' নিয়েও উত্তেজনা বাড়ছে। আন্তোয়ান ফুকা পরিচালিত এবং জ্যাকসনের ভাইপো জাফার জ্যাকসন অভিনীত এই চলচ্চিত্রটি ২০২৬ সালের ২৪শে এপ্রিল মুক্তি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই চলচ্চিত্রটি জ্যাকসনের জীবনের জটিলতা, তার উত্থান-পতন এবং তার অসামান্য সৃজনশীল প্রতিভাকে পর্দায় তুলে ধরবে।

'বিলি জিন'-এর এই চার্টে পুনরায় স্থান করে নেওয়া প্রমাণ করে যে মাইকেল জ্যাকসনের সঙ্গীত কেবল একটি সময়ের জন্য নয়, বরং এটি চিরন্তন। তার শিল্পকর্ম, তার উদ্ভাবনী শক্তি এবং তার আবেগপূর্ণ পরিবেশনা আজও বিশ্বজুড়ে মানুষকে অনুপ্রাণিত করে এবং এক নতুন প্রজন্মের কাছে তার আবেদনকে আরও দৃঢ় করে তোলে। এটি কেবল একটি গানের চার্টে প্রত্যাবর্তন নয়, বরং এটি এক কিংবদন্তীর কালজয়ী প্রভাবের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

উৎসসমূহ

  • EURweb

  • Billboard

  • PEOPLE

  • MJVibe

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।