প্রযুক্তি বিশ্বে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে, যেখানে ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন এখন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সংক্রান্ত বিশাল চুক্তির ফলে ওরাকলের শেয়ারের অভূতপূর্ব বৃদ্ধি তার এই উত্থানে প্রধান ভূমিকা রেখেছে। বর্তমানে তার আনুমানিক সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৩৯৩ বিলিয়ন ডলার, যা তাকে এই তালিকার শীর্ষে নিয়ে এসেছে। এলিসনের এই আর্থিক সাফল্য মূলত ওরাকলের AI এবং ক্লাউড পরিষেবার উপর গভীর মনোযোগের ফলেই সম্ভব হয়েছে।
সম্প্রতি, OpenAI-এর সাথে ওরাকলের একটি বিশাল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যেখানে OpenAI পাঁচ বছরের জন্য ওরাকলের ক্লাউড কম্পিউটিং পরিষেবা ব্যবহার করার জন্য ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ প্রদান করবে। এই চুক্তিটি ওরাকলের ক্লাউড অবকাঠামো (OCI) পরিষেবার চাহিদা যে কতটা বাড়ছে, তা স্পষ্ট করে। এই চুক্তির ফলে ওরাকলের শেয়ারের দাম এক দিনে ৩৬% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গত তিন দশকের মধ্যে তাদের সবচেয়ে বড় উত্থান।
এই সাফল্যের সমান্তরালে, এলিসনের পুত্র ডেভিড এলিসন স্কাইডার্ক্স মিডিয়ার মাধ্যমে হলিউডের একটি বড় পরিবর্তন এনেছেন। সম্প্রতি তিনি প্যারামাউন্ট গ্লোবালের ৮ বিলিয়ন ডলারের অধিগ্রহণ সম্পন্ন করেছেন, যা হলিউডের বিনোদন শিল্পে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন। এই অধিগ্রহণটি প্যারামাউন্টকে একটি প্রযুক্তি-কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে, যেখানে সৃজনশীলতা এবং প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটবে।
বিশ্বব্যাপী ক্লাউড কম্পিউটিং বাজারের দ্রুত বৃদ্ধি এই প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৫ সালে এই বাজারের আকার ছিল প্রায় ৭০০ বিলিয়ন ডলার এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ২ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিং-এর ক্রমবর্ধমান ব্যবহার এই বাজারকে আরও প্রসারিত করছে। এলিসনের এই উত্থান কেবল ব্যক্তিগত অর্জনের প্রতীক নয়, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং ক্লাউড প্রযুক্তির গুরুত্বকেও তুলে ধরে। ওরাকলের মতো সংস্থাগুলি, যারা এই প্রযুক্তির অগ্রভাগে রয়েছে, তারা আগামী দিনে আরও বড় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।