কিংবদন্তী বক্সার মোহাম্মদ আলীর ভিয়েতনাম যুদ্ধবিরোধী অবস্থানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত তার সামরিক খসড়া কার্ডটি আগামী ১০ থেকে ২৮ অক্টোবর, ২০২৫ পর্যন্ত ক্রিস্টি'স-এর একটি অনলাইন নিলামে বিক্রি করা হবে। এর আগে নিউইয়র্কে একটি পাবলিক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ঐতিহাসিক নথিটি নাগরিক অধিকার আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এর মূল্যমান ৩ থেকে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই খসড়া কার্ডটি স্থানীয় খসড়া বোর্ডের চেয়ারম্যান জে. অ্যালেন শেরম্যান কর্তৃক স্বাক্ষরিত হলেও, মোহাম্মদ আলীর স্বাক্ষর এতে নেই। এটি আলীর দৃঢ় নীতির প্রতীক, যিনি তার ধর্মীয় বিশ্বাস এবং যুদ্ধের প্রতি বিরোধিতার কারণে ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকার করেছিলেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে তিনি তার বক্সিং উপাধি হারান এবং প্রায় চার বছরের জন্য এই খেলা থেকে নিষিদ্ধ হন। ১৯৭১ সালে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খারিজ করে দেয়, যা তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে।
আলীর কন্যা, রাশেদা আলী ওয়ালশ, তার পিতার এই উত্তরাধিকারকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমার বাবার সাহস ও দৃঢ়তার বার্তা মনে করিয়ে দেওয়া এখন আগের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ, এবং ক্রিস্টি'স-এ তার খসড়া কার্ডের এই বিক্রয় সেই উত্তরাধিকারকে বিশ্বের সাথে ভাগ করে নেওয়ার একটি শক্তিশালী উপায়।"
ক্রিস্টি'স-এর আমেরিকান বিভাগের সিনিয়র বিশেষজ্ঞ পিটার ক্লারনেট এই নিলামটিকে একটি অনন্য সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, "সংগ্রহকারীরা এই শতাব্দীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের সাথে জড়িত একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অন্তরঙ্গ নথি অর্জন করার সুযোগ পাচ্ছেন। আলীর ভিয়েতনাম যুদ্ধের খসড়ার বিরুদ্ধে অবস্থান আমেরিকাকে বদলে দিয়েছিল এবং সেই সময়ে তার সহকর্মী ক্রীড়াবিদদের প্রশ্নগুলোকে প্রভাবিত করেছিল।"
এই খসড়া কার্ডটি ১৯৬৭ সালের ১৪ই মার্চ লুইসভিল, কেন্টাকি খসড়া বোর্ড কর্তৃক ইস্যু করা হয়েছিল। এই কার্ডটি আলীর ব্যক্তিগত মানিব্যাগে রাখা ছিল। কার্ডটিতে আলীর জন্ম নাম ক্যাসিয়াস মার্সেলাস ক্লে জুনিয়র উল্লেখ থাকলেও, শীর্ষে '(AKA) মোহাম্মদ আলী' যুক্ত ছিল। এই নিলামটি শুধুমাত্র আলীর ভক্তদের জন্যই নয়, বরং যারা ইতিহাস, নাগরিক অধিকার এবং ক্রীড়া জগতে তার প্রভাব সম্পর্কে জানতে আগ্রহী, তাদের জন্যও একটি বিশেষ আকর্ষণ।