মানব ইতিহাসের শুরু থেকেই মানুষ দীর্ঘ ও সুস্থ জীবনের আকাঙ্ক্ষা করেছে। বিংশ শতাব্দীতে চিকিৎসা বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধির উন্নতির ফলে বিশ্বব্যাপী মানুষের গড় আয়ু উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে এই বৃদ্ধির হার ধীর হয়ে এসেছে।
২০২৩ সালে, যুক্তরাষ্ট্রে গড় আয়ু ৭৮.৪ বছর ছিল, যা ২০২২ সালের তুলনায় ০.৯ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার কমে যাওয়া এবং হৃদরোগ, ক্যান্সার ও অনাকাঙ্ক্ষিত আঘাতজনিত মৃত্যুর হার হ্রাস পাওয়া উল্লেখযোগ্য।
তবে, উন্নত দেশগুলোতে দীর্ঘ জীবনের প্রবণতা ধীর হয়ে আসছে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, গত ৩০ বছরে এই দেশগুলোর গড় আয়ু মাত্র ৬.৫ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধীরগতির পেছনে বয়সজনিত রোগের হার বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে, দীর্ঘ জীবন মানুষের আচরণ, আবেগ এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। দীর্ঘ জীবন মানুষকে আরও বেশি অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ দেয়, যা তাদের মানসিক পরিপক্কতা বাড়ায়। এটি সমাজে বয়স্ক মানুষের সম্মান ও গুরুত্ব বৃদ্ধি করে, যা সামাজিক সংহতিকে শক্তিশালী করে।
সুতরাং, মানুষের গড় আয়ুতে পরিবর্তনগুলি মানব স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং সামাজিক-মানসিকতার পরিবর্তনের প্রতিফলন ঘটায়। উন্নত চিকিৎসা, স্বাস্থ্যবিধি এবং জীবনযাত্রার মানের উন্নতির ফলে আগামী দশকগুলোতে মানুষের গড় আয়ু বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।