প্রযুক্তি জগতের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ব্রায়ান জনসন, যিনি তাঁর 'প্রজেক্ট ব্লুপ্রিন্ট'-এর মাধ্যমে বার্ধক্যকে উল্টে দেওয়ার এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, তিনি এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। তাঁর লক্ষ্য হলো নিজের জৈবিক বয়সকে ১৮ বছরে নামিয়ে আনা, যা মানবজাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে এক গভীর জিজ্ঞাসার প্রতিফলন। জনসন তাঁর এই কঠোর প্রোটোকলের মাধ্যমে মাত্র সাত মাসের মধ্যে এপিজেনেটিক বয়স ৫.১ বছর কমাতে সক্ষম হয়েছেন, যা বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টি করেছে বলে তিনি দাবি করেছেন।
জনসনের এই নিবিড় সাধনা একটি সুনির্দিষ্ট, সম্পূর্ণ উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাদ্যের উপর নির্ভরশীল, যেখানে দৈনিক প্রায় ১,৯৭৭ ক্যালোরি গ্রহণ করা হয়। তাঁর খাদ্যতালিকায় মসুর ডাল এবং বিভিন্ন ধরনের বেরি বা ফলমূল প্রধান স্থান দখল করে আছে। এই প্রোটোকলের অংশ হিসেবে তিনি প্রতিদিন নির্দিষ্ট ব্যায়াম, কঠোর ঘুমের সময়সূচী, বিভিন্ন প্রকারের সম্পূরক গ্রহণ এবং এমআরআই ও ডেক্সা স্ক্যানের মতো উন্নত পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তাঁর সকালের রুটিনে হাইপারবারিক অক্সিজেন থেরাপি এবং লাল আলোর সংস্পর্শের মতো অত্যাধুনিক চিকিৎসাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এই সামগ্রিক নিয়ন্ত্রণ এবং ডেটা-চালিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জনসন মানব সম্ভাবনার প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন। তাঁর দল শত শত বায়োমার্কার ট্র্যাক করে, যার মধ্যে রয়েছে রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা এবং প্রদাহের মাত্রা। এই প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ, তিনি দাবি করেছেন যে তাঁর হৃদপিণ্ড ৩৭ বছর বয়সী, ত্বক ২৮ বছর বয়সী এবং ফুসফুসের ক্ষমতা ১৮ বছর বয়সীর সমতুল্য। এই জীবনধারা প্রমাণ করে যে সুনির্দিষ্ট শৃঙ্খলা এবং বৈজ্ঞানিক প্রয়োগের মাধ্যমে জীবনের গতিপথকে প্রভাবিত করা সম্ভব।
জনসনের এই পদ্ধতিটি কঠোর বিজ্ঞান এবং নৈতিক বিবেচনার এক জটিল মিশ্রণ। উদাহরণস্বরূপ, তিনি মাংস খাওয়া এড়িয়ে চলেন, যার পেছনে মানবজাতির প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎ আচরণের বিষয়ে তাঁর উদ্বেগ কাজ করে। তাঁর এই যাত্রাপথটি অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা, যা দেখায় যে স্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কেবল ভাগ্যের উপর নির্ভরশীল নয়, বরং এটি ইচ্ছাশক্তি এবং বৈজ্ঞানিক প্রয়োগের ফল। এই প্রকল্পটি মানবজাতির সামগ্রিক উন্নতির একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।