১১৬ বছর বয়সে এথেল ক্যাটারহ্যাম: দীর্ঘ জীবনের রহস্য

সম্পাদনা করেছেন: Liliya Shabalina

ইংল্যান্ডের এথেল ক্যাটারহ্যাম, যিনি ১৯০৯ সালের ২১শে আগস্ট জন্মগ্রহণ করেছিলেন, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি এবং দীর্ঘজীবী ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে স্বীকৃত। ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে তিনি তাঁর ১১৬তম জন্মদিন উদযাপন করেছেন, যা তাঁকে ১৯০০-এর দশকের শেষ জীবিত ব্যক্তিতে পরিণত করেছে। তাঁর জীবন ছয় ব্রিটিশ রাজার শাসনকাল এবং অসংখ্য ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী, যা তাঁর অসাধারণ সহনশীলতার পরিচয় দেয়।

এথেল ক্যাটারহ্যামের দীর্ঘ জীবনের মূলমন্ত্র হলো "কখনো তর্ক করো না"। তিনি বলেন, "আমি কারো সাথে তর্কে জড়াই না, আমি তাদের কথা শুনি এবং তারপর আমি যা চাই তাই করি।" এই সহজ দর্শন তাঁকে মানসিকভাবে শান্ত এবং শারীরিকভাবে সুস্থ রেখেছে। বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করেছেন, এবং ক্যাটারহ্যামের এই দ্বন্দ্ব এড়িয়ে চলার পদ্ধতি মানবিকভাবে তাঁর সুস্থতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। তিনি সুযোগকে খোলা মনে গ্রহণ করা এবং জীবনে সংযম বজায় রাখার কথাও বলেছেন।

ক্যাটারহ্যামের জীবনযাত্রা ছিল বৈচিত্র্যময়। ১৮ বছর বয়সে তিনি ভারতে গিয়েছিলেন একজন ব্রিটিশ পরিবারের জন্য আয়া হিসেবে কাজ করতে। পরে তিনি তাঁর স্বামী, ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর মেজর নরম্যান ক্যাটারহ্যামের সাথে হংকং এবং জিব্রাল্টারে বসবাস করেন। হংকংয়ে থাকাকালীন তিনি একটি নার্সারি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন যেখানে তিনি শিশুদের ইংরেজি এবং হস্তশিল্প শেখাতেন। তাঁর স্বামী ১৯৭৬ সালে মারা যান এবং তাঁর দুই মেয়েও বর্তমানে প্রয়াত। তাঁর পরিবারে এখন তিনজন নাতনি এবং পাঁচজন প্রপৌত্র-পৌত্রী রয়েছেন।

২০০৯ সালে জন্মগ্রহণকারী ক্যাটারহ্যাম শুধু বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তিই নন, তিনি ১৯০০-এর দশকে জন্মগ্রহণকারী শেষ জীবিত ব্যক্তি এবং যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বয়স্ক নাগরিকও বটে। তিনি ২০২০ সালে ১১০ বছর বয়সে কোভিড-১৯ থেকেও সেরে উঠেছিলেন, যা তাঁর শক্তি এবং কঠিন সময়ে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতার একটি স্পষ্ট প্রমাণ। তাঁর এই দীর্ঘ ও সুস্থ জীবনযাত্রা প্রমাণ করে যে, জীবনের উত্থান-পতনকে শান্তভাবে গ্রহণ করা এবং ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখা দীর্ঘ ও সুখী জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

গবেষণায় দেখা গেছে যে, সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, ইতিবাচক সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখা এবং মদ্যপান পরিহার করা দীর্ঘ জীবনের জন্য সহায়ক। যদিও ক্যাটারহ্যাম তাঁর দীর্ঘ জীবনের জন্য কোনো নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকা বা ব্যায়ামের রুটিনের কথা বলেননি, তাঁর "কখনো তর্ক না করা" এবং "শান্ত থাকা" - এই নীতিগুলি মানসিক সুস্থতা এবং দীর্ঘায়ু অর্জনে সহায়ক হতে পারে। তাঁর জীবন প্রমাণ করে যে, জীবনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং শান্ত থাকা দীর্ঘ ও পরিপূর্ণ জীবনের চাবিকাঠি।

উৎসসমূহ

  • L'internaute

  • Guinness World Records

  • UPI.com

  • Express & Star

  • ABC News

  • The Guardian

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।