চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংবেদনশীল প্রশান্তির জন্য 'দ্য কাম রুম'-এর উদ্বোধন

সম্পাদনা করেছেন: Irina Davgaleva

সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ২-এ সম্পূর্ণ নতুন একটি 'প্রশান্তির কক্ষ' বা 'দ্য কাম রুম'-এর শুভ সূচনা হয়েছে। ১৭ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে উন্মোচিত এই অত্যাধুনিক অঞ্চলটি ভ্রমণকারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে। এখানে প্রবেশকারীদের স্বাগত জানানো হয় স্নিগ্ধ আলো, দৃষ্টিনন্দন ভিজ্যুয়াল সমাধান এবং প্রকৃতির শান্তিদায়ক ধ্বনির মাধ্যমে, যা ব্যস্ততা ও ভ্রমণের ক্লান্তি থেকে মুক্তি দিয়ে এক প্রশান্তিময় পরিবেশ সৃষ্টি করে।

২০০ বর্গমিটারের বেশি বিস্তৃত এই স্থানটি চারটি স্বতন্ত্র অঞ্চলে বিভক্ত, যা প্রতিটি যাত্রীর প্রয়োজন অনুসারে তৈরি করা হয়েছে। এই চারটি অঞ্চল হলো—'ফরেস্ট' (বন), 'দ্য ডেন' (আস্তানা), 'দ্য নেস্ট' (নীড়) এবং 'স্বাগত অঞ্চল'। এই বহুমুখী স্থানটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে যাত্রীরা তাদের সংবেদনশীল চাহিদা অনুযায়ী বিশ্রাম নিতে পারে।

প্রথম অঞ্চল, 'ফরেস্ট', যেখানে ছড়িয়ে থাকা আলো এবং ক্রান্তীয় অঞ্চলের দৃশ্যের প্রক্ষেপণ তাৎক্ষণিক চাক্ষুষ স্বস্তি এনে দেয়। এটি মূলত মুহূর্তের মধ্যে মনকে শান্ত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে, 'দ্য ডেন' (আস্তানা) হলো এমন একটি স্থান যেখানে নরম কুশন এবং আরামদায়ক চেয়ার রয়েছে। এখানকার হালকা দোল খাওয়া গতি যাত্রীদের এক ধরনের নিরাপত্তার অনুভূতি প্রদান করে, যা দীর্ঘ যাত্রার আগে শরীরকে শিথিল করতে সাহায্য করে।

যারা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত গোপনীয়তা চান, তাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে 'দ্য নেস্ট' (নীড়)। এটি হলো নীরব, আলাদা ক্যাপসুল যেখানে আলোর তীব্রতা নিজের প্রয়োজনমতো নিয়ন্ত্রণ করা যায়, ফলে ব্যক্তিগত স্থানটি পুরোপুরি কাস্টমাইজ করার সুযোগ থাকে। এছাড়া, 'স্বাগত অঞ্চল' যাত্রীদের জন্য আরামদায়কভাবে তাদের অভিজ্ঞতা শুরু করার সুযোগ দেয়। প্রয়োজন অনুসারে, চাঙ্গি এক্সপেরিয়েন্স অ্যাম্বাসেডর নামে একটি ভার্চুয়াল সহকারীর সহায়তাও এখানে পাওয়া যায়।

এই স্থানটি সংবেদনশীল সামঞ্জস্য এবং মানসিক পুনরুজ্জীবনের প্রয়োজন আছে এমন সকল ভ্রমণকারীর জন্য একটি আদর্শ পছন্দ। বিশেষত, নিউরোডিভারজেন্ট যাত্রীরা এই নতুন স্থানটির গুরুত্ব বিশেষভাবে উপলব্ধি করবেন। তাদের জন্য এখানে সংবেদনশীল অতিরিক্ত উদ্দীপনা (sensory overload) থেকে দূরে সরে যাওয়ার এবং পরবর্তী যাত্রার আগে নিজেকে পুনরায় সতেজ করে তোলার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।

যাত্রীদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ এবং আন্তরিক পরিষেবার কারণে এই স্থানটি সকল ভ্রমণকারীর জন্য একটি নিখুঁত গন্তব্য হয়ে উঠেছে। মানব-কেন্দ্রিক বিমানবন্দর পরিচালনার ক্ষেত্রে চাঙ্গি বিশ্বব্যাপী তার নেতৃত্বকে আরও সুসংহত করছে। এই উদ্যোগটি আবারও প্রমাণ করে যে চাঙ্গি প্রতিটি যাত্রীর যাত্রা যেন শান্তিময়ভাবে শুরু হয়, তার জন্য প্রতিটি সূক্ষ্ম বিষয় নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে এবং প্রতিটি যাত্রীকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।

উৎসসমূহ

  • The Star

  • Changi Airport’s first sensory space at Terminal 2 welcomes travellers with invisible disabilities

  • Calm Room

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।