মানুষ এবং কুকুরের মধ্যেকার সম্পর্ক হাজার হাজার বছরের পুরনো, যা গভীর আবেগিক বন্ধনে আবদ্ধ। সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাগুলি নিশ্চিত করেছে যে কুকুররা মানুষের অনুভূতিগুলি বুঝতে এবং সেগুলির প্রতি প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম।
২০২১ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, কুকুররা তাদের ঘ্রাণশক্তির মাধ্যমে মানুষের স্ট্রেস-সম্পর্কিত রাসায়নিক পরিবর্তন সনাক্ত করতে পারে। যে কুকুরদের স্ট্রেসযুক্ত মানুষের ঘাম শুকানো হয়েছিল, তারা শান্ত মানুষের ঘাম শুকানো কুকুরদের তুলনায় বেশি স্ট্রেসের লক্ষণ দেখিয়েছিল। এছাড়াও, কুকুররা মানুষের মুখের অভিব্যক্তি দেখে বিভিন্ন আবেগ পার্থক্য করতে পারে। ২০২৩ সালের একটি গবেষণা দেখিয়েছে যে কুকুররা মানুষের আবেগ সনাক্ত করতে পারে, যা প্রমাণ করে যে তারা কেবল শব্দ শুনেই নয়, আমাদের আবেগিক অভিব্যক্তিগুলিও বুঝতে পারে।
এই আবেগিক সংবেদনশীলতা মানুষ ও কুকুরের মধ্যেকার বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে এবং মানসিক থেরাপি ও মনস্তাত্ত্বিক সহায়তার ক্ষেত্রেও ব্যবহারিক সুবিধা প্রদান করে। কুকুরদের উদ্বেগ এবং পিটিএসডি (PTSD) তে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তা করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে, যা তীব্র মানসিক চাপ বা আবেগিক সংকটের প্রাথমিক সতর্কতা হিসাবে কাজ করতে পারে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে কুকুররা মানুষের মুখের অভিব্যক্তি এবং কণ্ঠস্বরের মধ্যেকার আবেগিক সংকেতগুলিকে একত্রিত করতে পারে। তারা মানুষের মুখের অভিব্যক্তি এবং কণ্ঠস্বরের মধ্যেকার মিল খুঁজে বের করতে পারে, যা তাদের মানুষের আবেগিক অবস্থা বুঝতে সাহায্য করে। ২০২২ সালে প্রকাশিত একটি উল্লেখযোগ্য গবেষণা দেখিয়েছে যে কুকুররা মানুষের ঘাম এবং শ্বাস থেকে স্ট্রেসের গন্ধ সনাক্ত করতে পারে। এই গবেষণাটি থেরাপি কুকুরদের প্রশিক্ষণে সহায়ক হতে পারে এবং মানুষের মানসিক অবস্থা সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধি করে।
সংক্ষেপে, চলমান বৈজ্ঞানিক গবেষণাগুলি মানুষ ও কুকুরের সম্পর্কের জটিলতা তুলে ধরেছে। এটি আমাদের আবেগগুলি বোঝার এবং সেগুলিতে প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষেত্রে কুকুরদের অসাধারণ ক্ষমতাকে আরও জোরদার করে, যা আমাদের পারস্পরিক বন্ধনকে আরও গভীর করে তোলে।