বিশ্ব কুকুর মৈত্রী (World Dog Alliance - WDA) সম্প্রতি তাদের ১০ম বার্ষিক ডগ লাভার্স ডে (Dog Lovers' Day) উদযাপন করেছে। এই বিশেষ দিনটি বিশ্বজুড়ে কুকুর ও বিড়াল মাংস ব্যবসার বিরুদ্ধে WDA-এর এক দশকেরও বেশি সময়ের নিরলস প্রচেষ্টাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। সংগঠনটি বিশ্বজুড়ে আইন প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীনের মতো দেশগুলো কুকুর ও বিড়াল খাওয়া নিষিদ্ধ করে আইন পাশ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই আইন ৭ আগস্ট ২০২৪ তারিখে কার্যকর হয়েছে। WDA একটি আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে কুকুর ও বিড়াল খাওয়া নিষিদ্ধ করার জন্য কাজ করছে, যার লক্ষ্য ২০২৭ সালের মধ্যে ১৫০টি দেশ এতে স্বাক্ষর করবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, WDA সদস্যরা আন্তর্জাতিক চুক্তিতে সমর্থনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন (চুক্তির ভাষা ২০২৪ সালের মার্কিন বাজেট বিলের অন্তর্ভুক্ত ছিল) এবং জাপানকেও অনুরূপ আইন প্রণয়নের জন্য উৎসাহিত করেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় পরিষদ কুকুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করার জন্য একটি বিশেষ আইন পাশ করেছে, যা ৭ আগস্ট ২০২৪ তারিখে কার্যকর হয়েছে, এবং ২০২৭ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই আইনে প্রভাবিত ব্যবসাগুলির জন্য ক্ষতিপূরণ ও সহায়তার জন্য তিন বছরের একটি রূপান্তরকালীন সময়কাল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। চীন সরকার পশু পরিবহনের চেকপয়েন্টগুলি পরিচালনার জন্য নতুন নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করেছে, যা ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে কার্যকর হয়েছে, যা অবৈধ কুকুর ও বিড়াল পরিবহন প্রকাশে সহায়তা করে। WDA চীনে কুকুর চুরি রোধে কঠোর শাস্তির জন্য প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
জাপানে, ডগ অ্যান্ড ক্যাট পিস পার্টি (Dog and Cat Peace Party) নামে একটি রাজনৈতিক দল ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা কুকুর ও বিড়ালের কল্যাণে নিবেদিত বিশ্বের প্রথম রাজনৈতিক দল। নরওয়ের সংসদ সদস্যরা সংসদে পশু সুরক্ষায় দেশটির ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেছেন। ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে WDA-এর একজন প্রতিনিধি নরওয়েজিয়ান পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখেন। বিশ্বজুড়ে এই অগ্রগতি কেবল আইন প্রণয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
এই দশ বছরে, WDA এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো লক্ষ লক্ষ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করেছে এবং বিশ্বব্যাপী এই অমানবিক প্রথা বন্ধ করার জন্য একটি শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলেছে। এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রমাণ করে যে, যখন মানুষ একটি মহৎ লক্ষ্যের জন্য একত্রিত হয়, তখন ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।