অনেক বিড়াল মালিক লক্ষ্য করেন যে তাদের পোষা বিড়াল খাবার বাটি থেকে খাবার নিয়ে অন্য কোথাও খেতে নিয়ে যায়। এই আচরণটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং এর পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। এটি তাদের প্রবৃত্তির গভীরে প্রোথিত; বন্য বিড়ালরা শিকারী এবং প্রতিদ্বন্দ্বীদের এড়াতে তাদের শিকারকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেত। যদিও গৃহপালিত বিড়ালদের এই বিপদগুলি নেই, তবুও এই প্রবৃত্তি প্রায়শই রয়ে যায়। তারা নিরিবিলিভাবে তাদের খাবার উপভোগ করার জন্য একটি নিরাপদ স্থান খোঁজে।
কখনও কখনও, বিড়ালরা তাদের খাবারের স্থান নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকলে খাবার সরিয়ে নিয়ে যায়। বিড়ালরা খুব পরিষ্কার এবং সংবেদনশীল প্রাণী। ব্যস্ত এলাকায় খাবার স্থান, খুব কোলাহলপূর্ণ বা তাদের লিটার বক্সের খুব কাছাকাছি থাকলে তা মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এই ক্ষেত্রে, তারা আরও শান্তিপূর্ণ খাবারের জন্য একটি শান্ত জায়গায় তাদের খাবার নিয়ে যাবে। আরেকটি কারণ হতে পারে 'হুইস্কার স্ট্রেস' (whisker stress)। যদি খাবারের বাটির কিনারা খুব উঁচু বা সরু হয়, তবে খাওয়ার সময় বিড়ালের সংবেদনশীল গোঁফগুলি ক্রমাগত এর সাথে ঘষা খেতে পারে। এটি অস্বস্তিকর হতে পারে, যার ফলে তারা বাটির বাইরে খাবার খেতে পছন্দ করে। একটি অগভীর, চওড়া কিনারাযুক্ত বাটি বা সাধারণ প্লেট ব্যবহার করলে এই সমস্যায় সাহায্য হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে বিড়ালরা তাদের খাবার সরিয়ে নেওয়ার একটি প্রধান কারণ হল তাদের সহজাত প্রবৃত্তি। বন্য বিড়ালরা শিকারী প্রাণী এবং তারা তাদের শিকারকে নিরাপদ ও নিরিবিলি স্থানে নিয়ে গিয়ে খায় যাতে অন্য কোনো প্রাণী বা শিকারী তাদের খাবারে ভাগ বসাতে না পারে। গৃহপালিত বিড়ালদের মধ্যেও এই প্রবৃত্তি দেখা যায়, যদিও তাদের আর শিকারী প্রাণীদের থেকে নিজেদের রক্ষা করার প্রয়োজন হয় না। তারা তাদের খাবারকে সুরক্ষিত মনে করে এমন একটি স্থানে নিয়ে যেতে চায়।
খাবারের পরিবেশও বিড়ালদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিড়ালরা সাধারণত শান্ত, নিরিবিলি এবং পরিষ্কার জায়গায় খেতে পছন্দ করে। যদি তাদের খাবারের স্থান কোলাহলপূর্ণ হয়, লিটার বক্সের কাছাকাছি হয়, অথবা সেখানে অন্য কোনো পোষা প্রাণী বা মানুষের আনাগোনা বেশি থাকে, তবে তারা অস্বস্তি বোধ করতে পারে। এই কারণে, তারা খাবার সরিয়ে একটি পছন্দের, নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে পারে। এছাড়াও, 'হুইস্কার স্ট্রেস' বা গোঁফের চাপ একটি পরিচিত সমস্যা। বিড়ালের গোঁফ অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং খাবারের বাটির কিনারা বা দেওয়ালের সাথে বারবার ঘষা খেলে তারা অস্বস্তি বোধ করতে পারে। এই অস্বস্তি কমাতে অগভীর এবং চওড়া বাটি ব্যবহার করা উচিত, যাতে তাদের গোঁফ বাটিতে লেগে না যায়। কিছু বিড়াল তাদের খাবার বাটি থেকে বের করে মেঝেতে খেতে পছন্দ করে কারণ এটি তাদের গোঁফের উপর চাপ সৃষ্টি করে না। সুতরাং, আপনার বিড়াল যদি খাবার অন্যত্র নিয়ে যায়, তবে এটি তাদের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি, পরিবেশগত কারণ বা শারীরিক অস্বস্তির লক্ষণ হতে পারে। সঠিক বাটি নির্বাচন এবং একটি শান্ত, নিরাপদ খাবারের পরিবেশ তৈরি করে আপনি আপনার প্রিয় পোষ্যটিকে আরও আরামদায়কভাবে খেতে সাহায্য করতে পারেন।