এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির সাথে সাথে কর্মসংস্থানের উপর এর প্রভাব এবং ভাষার বিভাজন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত, ইংরেজি ভাষার দক্ষতা বিভিন্ন পেশায় উচ্চ পদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
গবেষণায় দেখা যায়, বর্তমানে এআই সিস্টেমগুলোর প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত ডেটার একটি বড় অংশ ইংরেজি ভাষা থেকে আসে। এর ফলে, ইংরেজি ভাষার আধিপত্য বাড়ছে, এবং অন্যান্য ভাষার ব্যবহারকারীরা পিছিয়ে পড়তে পারে, যা বৈষম্য বাড়াতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলা সহ অন্যান্য ভাষার মানুষের জন্য এআই-এর সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
বহুভাষিক এআই মডেল তৈরি করার জন্য বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে, যা কম প্রতিনিধিত্বপূর্ণ ভাষাগুলোর উপর মনোযোগ দেয়। এর মধ্যে রয়েছে Hugging Face-এর সাথে GitHub-এর সহযোগিতা এবং কম প্রতিনিধিত্বপূর্ণ ইউরোপীয় ভাষায় বিষয়বস্তু তৈরির জন্য অনুদান কর্মসূচি।
বাংলাদেশেও এআই কর্মসংস্থানকে নতুন রূপ দিচ্ছে। পোশাক, কৃষি এবং উৎপাদন খাতের মতো ক্ষেত্রগুলোতে অটোমেশন এবং এআইয়ের ব্যবহার বাড়ছে। অটোমেশন, ডিজিটালাইজেশন এবং এআই গ্রহণের ফলে ঐতিহ্যবাহী কাজের ধরণ পরিবর্তিত হচ্ছে, নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে, এবং কিছু ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান হ্রাসও ঘটছে।
কর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ এআইয়ের কারণে চাকরি হারানোর আশঙ্কা করছেন। তবে, ব্যবস্থাপনার পক্ষ থেকে এআইকে কার্যক্রম সহজ করার এবং নতুন চাকরির সুযোগ তৈরির সম্ভাবনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। কর্মীদের নতুন দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
এআই প্রযুক্তি উন্নত হওয়ার সাথে সাথে ডেটা বিশ্লেষণ, প্রোগ্রামিং এবং ডিজিটাল জ্ঞান এর মতো কিছু দক্ষতা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। তাই, এআই-এর সুবিধা সবার কাছে পৌঁছে দিতে এবং ভাষার বিভাজন কমাতে, বহুভাষিক এআই মডেল তৈরি করা এবং স্থানীয় ভাষাগুলোর জন্য ডেটা তৈরি করা দরকার।
এআই-এর এই পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে কর্মীদের নতুন দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণ এবং সুযোগ তৈরি করা প্রয়োজন। সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উচিত এআই-এর ইতিবাচক দিকগুলো কাজে লাগিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং স্থিতিশীল কর্মসংস্থান ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য কাজ করা।