পরিবারগুলি প্রায়শই নিজস্ব শব্দভাণ্ডার এবং শব্দগুচ্ছ তৈরি করে, যা কেবল তাদের সদস্যদের কাছেই অর্থপূর্ণ। এই অনন্য ভাষাগত বিন্যাসকে "ফ্যামিলিক্টস" (familects) বলা হয়। জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিনথিয়া গর্ডন, যিনি "মেকিং মিনিংস, ক্রিয়েটিং ফ্যামিলি" (Making Meanings, Creating Family) বইয়ের লেখিকা, এই ঘটনাটি নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা করেছেন। তিনি পর্যবেক্ষণ করেছেন যে, "সমস্ত সামাজিক গোষ্ঠী—পরিবার, সংস্থা, বন্ধুদের দল—তাদের প্রত্যেকেরই ভাষা ব্যবহারের নির্দিষ্ট, বিন্যাসিত উপায় রয়েছে এবং ভাষার মাধ্যমেই আমরা নিজেদের একত্রিত করি।"
গর্ডনের দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা প্রাথমিক গবেষণায় চারটি পরিবারের বাবা-মায়েদের তাদের দৈনন্দিন কথোপকথন রেকর্ড করতে উৎসাহিত করা হয়েছিল। এই রেকর্ডিংগুলি প্রতিটি পরিবারের মধ্যে স্বতন্ত্র ভাষাগত অভ্যাসের উপর আলোকপাত করে। উদাহরণস্বরূপ, বাবা-মায়েরা হয়তো একটি শিশুর বোতলের জন্য "বেবি বুবু" বা নুডলসের জন্য "নুনু" ব্যবহার করতে পারেন, যা শিশুরা বড় হয়ে গেলেও তাদের পরিবারের অংশ হয়ে থাকে।
একটি ফ্যামিলিক্টের জন্ম প্রায়শই ছোট শিশুদের কাছ থেকে শুরু হয়, যাদের নতুন উচ্চারণ এবং শব্দ উদ্ভাবনকে পরিবার গ্রহণ করে। একটি শিশু হয়তো আঙুরকে "বিকস" বলতে পারে, যা পরে পরিবারের মূল্যবান শব্দভাণ্ডারের অংশ হয়ে দাঁড়ায়। গর্ডন জোর দিয়ে বলেন যে, এই ভাষাগত সৃষ্টি অন্যান্য সামাজিক গোষ্ঠীর তৈরি করা উদ্দেশ্যমূলক পরিভাষার মতো নয়, বরং এটি একটি জৈব প্রক্রিয়া।
ফ্যামিলিক্টস কেবল মজার শব্দ নয়, এগুলি আসলে "ভাষাগত আঠা" (linguistic glue) হিসেবে কাজ করে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে "মৌখিক উত্তরাধিকার" (verbal heirlooms) হিসেবে সঞ্চারিত হয়। এই অনন্য শব্দ ও বাক্যাংশগুলি পরিবারের গল্প, রীতিনীতি এবং স্মৃতিগুলিকে শক্তিশালী করে, যা তাদের মধ্যে গভীর একাত্মতা এবং পরিচয়ের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। এটি পরিবারগুলিকে তাদের নিজস্ব স্বতন্ত্র "ব্র্যান্ড" বা পরিচিতি তৈরি করতে সাহায্য করে, যা বাইরের জগৎ থেকে তাদের আলাদা করে তোলে। এই ভাষাগত বন্ধন সদস্যদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা এবং একতা বাড়ায়।
আরও তাৎপর্যপূর্ণভাবে, ফ্যামিলিক্টস একটি সর্বজনীন ঘটনা যা সংস্কৃতি, জাতীয়তা এবং ভাষা অতিক্রম করে বিস্তৃত। এটি মানুষের মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং ভাগ করা অর্থ তৈরি করার অন্তর্নিহিত আকাঙ্ক্ষার একটি প্রমাণ। এই ভাষাগত উদ্ভাবনগুলি দেখায় যে, কীভাবে মানুষ স্বাভাবিকভাবেই নিজেদের মধ্যে গভীর বন্ধন তৈরি করতে এবং একটি সম্মিলিত পরিচয় গড়ে তুলতে চায়। এটি মানব অভিজ্ঞতার একটি মৌলিক দিক, যা আমাদের একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকার এবং অর্থপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষমতাকে তুলে ধরে। পরিশেষে, ফ্যামিলিক্টস পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা এবং পরিচয়ের অনুভূতি গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলি ভাষার সৃজনশীলতা এবং প্রিয়জনদের মধ্যে গভীর অন্তরঙ্গতা তৈরি করার ক্ষমতাকে উদাহরণ করে তোলে, যা প্রতিটি পরিবারকে অনন্য করে তোলে।