শিক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা: ইউরোপীয় কিশোর-কিশোরীরা প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার করছে, তবে প্রয়োজন ডিজিটাল সাক্ষরতা

সম্পাদনা করেছেন: Olga Samsonova

আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা এখন প্রগতিশীল পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছে, যেখানে শিক্ষার্থীর অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এই পরিবর্তনের ফলে স্বাভাবিকভাবেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সরঞ্জামগুলির একীকরণ ঘটছে, যা বিশ্বকে আরও গভীরভাবে বোঝার আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে। গুগল-এর পৃষ্ঠপোষকতায় লিভিটি (Livity) কর্তৃক পরিচালিত ইউরোপীয় গবেষণা “The Future Report” তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই প্রযুক্তির ব্যাপক অনুপ্রবেশের বিষয়টি উন্মোচন করেছে।

এই গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ৪০ শতাংশ প্রতিদিন বা প্রায় প্রতিদিন এআই ব্যবহার করে। তরুণ প্রজন্ম এআই-কে উন্নয়নের অনুঘটক হিসেবে দেখে: জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৮১ শতাংশ সৃজনশীলতা বৃদ্ধির কথা জানিয়েছেন এবং ৬৫ শতাংশ মনে করেন যে জটিল সমস্যা সমাধানে এই সরঞ্জামগুলি অত্যন্ত কার্যকর। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ৪৭ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন যে এআই বিভ্রান্তিকর ধারণা বা বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা করার জন্য একটি কার্যকর মাধ্যম, যা শিক্ষাগত অভিযোজনের জন্য নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে।

তবে, বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় যে যেকোনো শক্তিশালী প্রযুক্তির জন্য সচেতন পরিচালনার প্রয়োজন। গবেষণাটি ডিজিটাল সাক্ষরতা এবং সমালোচনামূলক বিশ্লেষণের দক্ষতার তীব্র প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে। যদিও ৫৫ শতাংশ কিশোর-কিশোরী তাদের ব্যবহৃত কনটেন্টের ওপর আস্থা রাখে, তবুও তারা স্বজ্ঞাতভাবে এআই দ্বারা প্রদত্ত ফলাফলগুলি অভ্যন্তরীণভাবে যাচাই করার গুরুত্ব উপলব্ধি করে। এই বিষয়টি আনুষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য একটি নতুন ভিত্তি তৈরির ইঙ্গিত দেয়, কারণ জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫৬ শতাংশ জানিয়েছেন যে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অন্তত একটি এআই সরঞ্জাম ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে, এআই-এর বাস্তবায়ন একটি কৌশলগত বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যেখানে এশিয়ার মতো কিছু অঞ্চল দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে ইউরোপকে জিডিপিআর (GDPR)-এর মতো নিয়ন্ত্রক বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, যা অগ্রগতির গতি কমিয়ে দিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ইতালিতে কর্মীদের ঘাটতি মোকাবিলা এবং শিক্ষাকে ব্যক্তিগতকৃত করার উদ্দেশ্যে ১৫টি স্কুলে এআই সহকারী অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কর্তৃপক্ষ দুই বছরের একটি পরীক্ষা শুরু করেছে। সফল হলে ২০২৬ সালের মধ্যে এটি সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। রাশিয়া সহ বিভিন্ন স্থানে বিশেষজ্ঞ আলোচনাগুলি জনসাধারণের মধ্যে মিশ্র মনোভাবের দিকে ইঙ্গিত করে, যেখানে জোর দেওয়া হয় যে সৃজনশীলতা এবং নতুন ধারণা তৈরির কাজটি মানুষের হাতেই থাকা উচিত।

মূল বিষয়টি হলো শিক্ষাগত একীকরণ: শুধুমাত্র সরঞ্জামগুলি প্রয়োগ না করে, সেগুলির অর্থপূর্ণ ব্যবহারের ক্ষমতা গড়ে তোলা অপরিহার্য। এমআইটি মিডিয়া ল্যাব (MIT Media Lab)-এ পরিচালিত গবেষণার মতো অনুসন্ধানগুলি দেখায় যে কনটেন্ট তৈরির জন্য এআই-এর ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা মস্তিষ্কের সম্পৃক্ততা হ্রাস করতে পারে এবং চিন্তার মৌলিকত্ব কমিয়ে দিতে পারে। নতুন জ্ঞানের এই পরিস্থিতিতে, ডিজিটাল পরিপক্কতাকে উৎসাহিত করে এমন দায়িত্বশীল শিক্ষাগত নির্দেশনা সুষম বিকাশের জন্য একটি পূর্বশর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উৎসসমূহ

  • SAPO Tek

  • Marketeer

  • Notícias ao Minuto

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।