শিশুদের ভুলের চেয়ে তাদের অগ্রগতিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল নোভারা। তিনি মনে করেন, প্রথাগত গ্রেডিং ব্যবস্থা বাতিল করা উচিত এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী ইলেকট্রনিক রেজিস্টারগুলোও সরিয়ে ফেলা দরকার। নোভারা শ্রেণিকক্ষে মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করারও পক্ষে। তিনি ১৪ বছরের কম বয়সীদের জন্য স্মার্টফোন এবং ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার সীমিত করার প্রস্তাব করেছেন, যা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোতেও দেখা যায়। এই প্রস্তাবগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য আরও মনোযোগী এবং কম চাপযুক্ত শিক্ষাগত অভিজ্ঞতা তৈরি করা। এই প্রগতিশীল শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে গভীর আলোচনার জন্য আগামী ৮ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে পিয়াসেঞ্জা-র পলিটেমা থিয়েটারে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রযুক্তি শিক্ষা ব্যবস্থায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) ব্যবহার করে মূল্যায়ন প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল, রিয়েল-টাইম এবং ব্যক্তিগতকৃত করা সম্ভব হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন শিখন শৈলী ও চাহিদা পূরণ করা সহজ হচ্ছে। প্রযুক্তিনির্ভর মূল্যায়ন শিক্ষার্থীদের গতানুগতিক পরীক্ষার বাইরে গিয়ে বাস্তব জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সুযোগ করে দেয়, যেমন সিমুলেশন এবং ভার্চুয়াল ল্যাবরেটরি ব্যবহার করে তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা যাচাই করা। এটি শিক্ষার্থীদের প্রকৃত ক্ষমতা বোঝার এবং ব্যবহারিক পরিস্থিতিতে জ্ঞান প্রয়োগের একটি গভীর সুযোগ তৈরি করে।
মোবাইল ফোন নিষিদ্ধকরণ নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিতর্ক চলছে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, ফোন-মুক্ত স্কুলে শিক্ষার্থীরা বেশি সুখী, স্বাস্থ্যকর এবং তাদের পড়াশোনায় বেশি মনোযোগী থাকে। অস্ট্রেলিয়ার ফ্লিন্ডার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ফোন নিষিদ্ধ করার পর শিক্ষার্থীরা আরও শক্তিশালী সামাজিক সংযোগ স্থাপন করতে পারছে, যেমন মুখোমুখি মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধি এবং সহপাঠীদের প্রতি আরও বেশি সচেতনতা। শিক্ষকদের মতে, ফোন নিষিদ্ধ করার ফলে শ্রেণিকক্ষে মনোযোগ বৃদ্ধি পায় এবং কম বিভ্রান্তি দেখা যায়। এর পাশাপাশি, সাইবার বুলিং এবং সংঘাত কমে যাওয়ায় স্কুলের পরিবেশ আরও নিরাপদ ও বন্ধুত্বপূর্ণ হয়েছে।
ইতালিতে শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। ১৯২৩ সালের জেন্টাইল সংস্কার থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক নীতিগুলো শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপর জোর দিচ্ছে। প্রযুক্তির ব্যবহার, ডিজিটাল সাক্ষরতা বৃদ্ধি এবং সকলের জন্য শিক্ষার সুযোগ উন্নত করার মাধ্যমে ইতালি তার শিক্ষাব্যবস্থাকে একটি রূপান্তরমূলক যাত্রার মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যাতে শিক্ষার্থীরা আধুনিক বিশ্বে সাফল্যের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারে।