২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে এসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন পরিস্থিতিতে এক সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে। এই রূপান্তরগুলি নতুন প্রশাসনের দ্বারা গৃহীত কঠোর আইন প্রয়োগকারী ব্যবস্থা এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামোর পুনর্বিবেচনার সরাসরি ফল। এই নীতিগত পরিবর্তনগুলি সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ এবং মানবিক স্থানান্তরের প্রয়োজনীয়তার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার বিশ্লেষণ করার জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
২০২৫ সালের প্রথমার্ধের (জানুয়ারি থেকে মে) প্রাথমিক পরিসংখ্যান অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যায় একটি সুস্পষ্ট হ্রাসের ইঙ্গিত দেয়। পিউ রিসার্চ সেন্টার (Pew Research Center) ২০২৩ সালে এই সংখ্যাটি ১৪ মিলিয়ন অনুমান করেছিল। কিন্তু ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে, প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, এই গোষ্ঠীটি প্রায় এক মিলিয়ন কমে গেছে। মার্কিন সীমান্ত ও শুল্ক সুরক্ষা (CBP)-এর আটকের পরিসংখ্যানও এই প্রবণতা নিশ্চিত করে: সারা বছর জুড়ে মোট আটকের সংখ্যায় তীব্র পতন লক্ষ্য করা গেছে। উদাহরণস্বরূপ, ডিসেম্বর ২০২৪ সালে যেখানে ২,৫১,১৭৮ টি আটকের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছিল, সেখানে এপ্রিল ২০২৫ নাগাদ এই সংখ্যাটি নাটকীয়ভাবে কমে মাত্র ১০,০১৪-তে দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তেও একই ধরনের নিম্নমুখী গতিশীলতা দেখা গেছে: জানুয়ারি ২০২৫-এ ২৯,১০৫ টি আটক থেকে এপ্রিল ২০২৫-এ তা ৮,৩৮৩ টিতে নেমে এসেছে।
আইন প্রয়োগের কঠোরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রশাসনিক স্তরেও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। বিশেষত, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগ (DHS) কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া এবং ভেনিজুয়েলার (CHNV) নাগরিকদের জন্য একটি বিশেষ প্যারোল কর্মসূচি (parole program) চালু করেছিল। তবে, ২০২৫ সালের মে মাসের তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট একটি স্থগিতাদেশ জারি করে, যার ফলে ডিএইচএস ২০২২-২০২৩ সালে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিটি বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করতে সক্ষম হয়।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন, যিনি ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করেন, অভিবাসন প্রবাহ হ্রাসের লক্ষ্য অর্জনের বিষয়ে সক্রিয়ভাবে দাবি জানিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র গত অর্ধ শতাব্দীর মধ্যে প্রথমবারের মতো নেতিবাচক নিট অভিবাসন লাভ (negative net migration gain) রেকর্ড করতে পারে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ২.৮ মিলিয়ন মানুষ। স্টিফেন মিলার, যাকে কঠোর অভিবাসন নীতির মূল স্থপতি হিসেবে অভিহিত করা হয়, তিনি এই পরিস্থিতিকে এমন সময়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন যখন আমেরিকা ছিল 'অপ্রতিদ্বন্দ্বী বৈশ্বিক পরাশক্তি'।