উজবেকিস্তান গ্রামীণ অঞ্চলে দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং কৃষি খাতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যাপক রূপান্তরমূলক কর্মসূচি সক্রিয়ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলি বিশ্বব্যাংক, এফএও (FAO) এবং ওপেক ফান্ড (OPEC Fund)-এর মতো শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। ফলস্বরূপ, নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কাঠামোকে মজবুত করছে।
কৃষি মন্ত্রী ইব্রোহিম আবদুরখমোনভ, যিনি ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে এই পদে রয়েছেন, তিনি সামগ্রিক পদক্ষেপগুলির বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পেশ করেছেন। এই সংস্কারগুলির একটি প্রধান সাফল্য হলো তুলা শিল্পে বাধ্যতামূলক শ্রম এবং শিশুশ্রমের প্রথা পুরোপুরি বন্ধ করা। এই পদক্ষেপটি প্রমাণ করে যে দেশটি এখন আরও নৈতিক ও টেকসই কৃষি পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছে। একই সময়ে, কৃষি খাতে বেসরকারি খাতের সক্রিয় অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে, ওপেক ফান্ড একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই বাজার অর্থনীতির দ্বিতীয় উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ৭০ মিলিয়ন ইউরো ঋণ প্রদান করেছে।
পরিসংখ্যানগুলি এই গতিশীল ইতিবাচক পরিবর্তনের ধারাকে নিশ্চিত করে। দেশে দারিদ্র্যের হার ২০১৯ সালের ২৩% থেকে কমে ২০২৩ সালে ১১%-এ দাঁড়িয়েছে। দেশের নেতৃত্ব ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ এই হারকে মাত্র ৬%-এ নামিয়ে আনার উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। পাশাপাশি, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) অনুসারে, ২০৩০ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্য সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করার লক্ষ্য রয়েছে। রাষ্ট্রপতি শাভকাত মিরজিইয়োয়েভ সম্প্রতি উল্লেখ করেছেন যে গত কয়েক বছরে দেশের অর্থনীতি দ্বিগুণ হয়েছে এবং চলতি বছরের শেষে মাথাপিছু আয় ৩৫০০ মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে উজবেকিস্তানের প্রচেষ্টার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অনস্বীকার্য। গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি ইনডেক্স অনুসারে, ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই খাতে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি প্রদর্শনকারী দশটি দেশের মধ্যে উজবেকিস্তান প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এটি দেশের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা এবং স্থিতিশীলতার প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা বাড়িয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উৎসাহ প্রদানকারী সংস্কারগুলিকে সমর্থন করার জন্য বিশ্বব্যাংক ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছিল, যা এই সাফল্যের ভিত্তি স্থাপন করেছে।
তুলা একফসলি চাষের (monoculture) অভ্যাস থেকে সরে আসার কারণে ইয়োকুতখোন আব্দুল্লায়েভার মতো কৃষকরা তাদের ফসল বহুমুখী করতে সক্ষম হয়েছেন। তারা এখন উদ্যানপালনের মতো আরও লাভজনক ও উচ্চ-মূল্যের ক্ষেত্রগুলিতে মনোনিবেশ করছেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে তাশখন্দ, সমরকন্দ এবং ফারগানা অঞ্চলের মতো এলাকায় ফসলের বৈচিত্র্যকরণের সূচক অনেক বেশি। এই বৈচিত্র্য স্থানীয় পর্যায়ে উন্নত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করছে এবং খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।