২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যে এইচআইভি নির্মূলের পরিকল্পনা অনুমোদন, ১৭০ মিলিয়ন পাউন্ড অর্থায়ন

সম্পাদনা করেছেন: Tatyana Hurynovich

যুক্তরাজ্য সরকার ইংল্যান্ডের জন্য ২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে এইচআইভি মোকাবিলার কর্মপরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে। এই ঘোষণার মাধ্যমে তারা দশকের শেষ নাগাদ ভাইরাসটির নতুন সংক্রমণ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার জাতীয় অগ্রাধিকার নিশ্চিত করেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাটি করা হয় ২০২২ সালের ১লা ডিসেম্বর, বিশ্ব এইডস দিবসে, স্বাস্থ্য ও সামাজিক পরিচর্যা মন্ত্রী ওয়েস স্ট্রিটিং-এর পক্ষ থেকে। এই কৌশলগত উদ্যোগটি ১৭০ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি আর্থিক প্রতিশ্রুতি দ্বারা সমর্থিত, যা সরকারের দৃঢ় সংকল্পের গভীরতা প্রমাণ করে।

এই নতুন পরিকল্পনাটি শুধুমাত্র চিকিৎসার ওপর মনোযোগ না দিয়ে, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার ওপর জোর দিচ্ছে। এটি পাঁচটি মূল কৌশলগত স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে তৈরি: প্রতিরোধ, পরীক্ষা, চিকিৎসা, সমৃদ্ধি এবং সহযোগিতা। স্বাস্থ্য ও সামাজিক পরিচর্যা বিভাগ (DHSC) ইউকেএইচএসএ (UKHSA) এবং এনএইচএস ইংল্যান্ডের (NHS England) মতো সংস্থাগুলির সাথে সমন্বয় করে এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। এই পরিকল্পনার আগে জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে; প্রাথমিক ২০২৪ সালের তথ্য অনুযায়ী, ইংল্যান্ড টানা ষষ্ঠ বছরের মতো ইউএনএইডস (UNAIDS) এর ৯৫-৯৫-৯৫ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে। তবে, ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে নতুন রোগ নির্ণয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়, একটি নতুন এবং আরও বেশি প্রতিরোধ-কেন্দ্রিক পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। অধ্যাপক কেভিন ফেন্টনকে এইচআইভি সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে তার ভূমিকা নবায়ন করা হয়েছে এবং তিনিই এই নতুন ধাপের নেতৃত্ব দেবেন।

পরিকল্পনার একটি নির্দিষ্ট পদক্ষেপ হলো সেই ৫,০০০ ব্যক্তিকে পুনরায় চিকিৎসায় ফিরিয়ে আনা, যারা বর্তমানে প্রয়োজনীয় যত্ন পাচ্ছেন না। এর মাধ্যমে 'যত্ন ধরে রাখার ব্যবধান' (retention gap) দূর করার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। এই পরিকল্পনাটি সমতার নীতির প্রতিও অঙ্গীকারবদ্ধ, যেখানে মহামারীতে অসমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি জনগোষ্ঠীর অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে দেখা যায়, যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যেই ইউএনএইডস-এর প্রাথমিক ৯০-৯০-৯০ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে এবং এখন ২০২৫ সালের মধ্যে ৯৫-৯৫-৯৫ অর্জনের দিকে মনোনিবেশ করছে।

যুক্তরাজ্য সরকার বিশ্বাস করে যে যদি দৃঢ় সংকল্প এবং সঠিক সম্পদের ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়, তবে ২০৩০ সালের মধ্যে এই জনস্বাস্থ্য লক্ষ্য অর্জন করা সম্পূর্ণ সম্ভব। এই কৌশলটি সুদূরপ্রসারী এবং পর্যাপ্তভাবে অর্থায়নকৃত, যা প্রাক-এক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সিস (PrEP) এর মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অসম প্রবেশাধিকারের মতো পদ্ধতিগত সমস্যাগুলি সমাধান করার আশা জাগায়। ফলস্বরূপ, এই নতুন পাঁচ বছর মেয়াদী পরিকল্পনাটি নতুন সংক্রমণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার জন্য সক্রিয় এবং আগাম পদক্ষেপ গ্রহণের দিকে একটি সুস্পষ্ট পরিবর্তন নির্দেশ করে।

এই উদ্যোগের সাফল্য নির্ভর করবে কার্যকর বাস্তবায়ন এবং সমাজের সকল স্তরের সক্রিয় অংশগ্রহণের ওপর। বিশেষ করে, যে জনগোষ্ঠীগুলি ঐতিহাসিকভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে পিছিয়ে ছিল, তাদের কাছে পৌঁছানো এই পরিকল্পনার অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে। ১৭০ মিলিয়ন পাউন্ডের এই বিনিয়োগ কেবল চিকিৎসার খরচ মেটাবে না, বরং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরীক্ষা সহজলভ্য করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। যুক্তরাজ্য সরকার আশা করছে যে এই সুচিন্তিত পদক্ষেপগুলি আগামী দশকে এইচআইভি সংক্রমণকে ইতিহাসের পাতায় স্থান দেবে।

উৎসসমূহ

  • gov.uk

  • lesahel.org

  • BHIVA

  • GOV.UK

  • GOV.UK

  • The Guardian

  • Medscape

  • UNAIDS

  • Agence Nigérienne de Presse

  • ActuNiger

  • Le Sahel

  • Aides.org

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।