জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে হাইতির ক্রমবর্ধমান গ্যাং সহিংসতা মোকাবেলার জন্য একটি বিশেষ বাহিনী গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পানামা এই খসড়া প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেছে, যার লক্ষ্য হলো হাইতির শক্তিশালী সশস্ত্র গ্যাংগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি নিবেদিত 'গ্যাং দমন বাহিনী' প্রতিষ্ঠা করা।
এই উদ্যোগটি বর্তমান জাতিসংঘ-সমর্থিত মিশনের সীমাবদ্ধতাগুলো, বিশেষ করে সম্পদ ও জনবলের অভাব কাটিয়ে ওঠার জন্য নেওয়া হচ্ছে। জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডরোথি শেয়া এই মিশনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে বলেছেন যে এটি 'এলাকা দখল, অবকাঠামো সুরক্ষিত এবং হাইতির জাতীয় পুলিশ বাহিনীকে সহায়তা করার' সক্ষমতা রাখবে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে একটি জাতিসংঘ সহায়তা কার্যালয়ও প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে, যা মাঠ পর্যায়ে লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস হাইতির গ্যাংগুলোর উপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোরভাবে প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে এই গ্যাংগুলোর ব্যবহৃত অস্ত্রের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ফ্লোরিডা থেকে পাচার হয়ে আসে। হাইতিতে মানবিক সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গ্যাং সহিংসতার কারণে ১.৩ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। একটি উদ্বেগজনক তথ্য হলো, ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে গ্যাং কর্তৃক শিশু নিয়োগের হার ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় ৭০০% বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে, গ্যাং সদস্যদের প্রায় ৫০% হলো শিশু, যাদের প্রায়শই যুদ্ধে বাধ্য করা হয় বা শ্রমের জন্য শোষণ করা হয়।
এই ক্রমবর্ধমান সহিংসতার প্রতিক্রিয়ায়, হাইতির সরকার ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে পশ্চিম, আর্টিবonite এবং সেন্টার অঞ্চলে তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এই পদক্ষেপটি নিরাপত্তাহীনতা মোকাবেলা এবং গ্যাং কার্যকলাপের দ্বারা আরও খারাপ হওয়া কৃষি ও খাদ্য সংকট মোকাবিলার জন্য নেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত জাতিসংঘ মিশনটি হাইতির জাতীয় পুলিশ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহগুলোতে নিরাপত্তা পরিষদ এই খসড়া প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই উদ্যোগটি হাইতির জনগণের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।