আগামী ২৯ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গাজা শহরকে একটি 'বিপজ্জনক যুদ্ধক্ষেত্র' হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণার ফলে পূর্বে স্থাপিত মানবিক সহায়তা বিতরণের বিরতিগুলি স্থগিত করা হয়েছে। হামাসকে নির্মূল করা এবং জিম্মিদের পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এই 'কৌশলগত বিরতি' স্থগিত করার ঘটনা গাজার বেসামরিক জনগণের উপর মানবিক প্রভাব নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়িয়েছে। জাতিসংঘ সতর্ক করেছে যে একটি পূর্ণাঙ্গ আক্রমণ গাজার হাসপাতালের শয্যা ক্ষমতা অর্ধেক করে দিতে পারে, যা স্বাস্থ্য সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
এই ঘোষণার পূর্বে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা শহরে তাদের বোমা হামলা তীব্র করেছিল, যার ফলে অন্তত ১৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং অসংখ্য আহত হয়েছে। এই উত্তেজনা ব্যাপক বেসামরিক বাস্তুচ্যুতির কারণ হয়েছে, যেখানে বাসিন্দারা উপকূলের দিকে পালিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থা (UNRWA) পরিস্থিতির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, বিশেষ করে গাজা শহরের শিশুদের মধ্যে গুরুতর অপুষ্টির বিষয়টি তুলে ধরেছে। UNRWA কমিশনার-জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি জরুরি সরবরাহের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন।
২৯ আগস্ট, ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত, এই সংঘাতে ৬২,০০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যাগরিষ্ঠ। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি ক্রমবর্ধমান সহিংসতার মোকাবিলায় অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে। জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা পর্যায় শ্রেণিবিভাগ (IPC) অনুসারে, গাজা শহর দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত। এই পরিস্থিতি খাদ্য সরবরাহের উপর ইসরায়েলের অবরোধ এবং ব্যাপক বাস্তুচ্যুতির কারণে আরও খারাপ হয়েছে। নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের মতো সংস্থাগুলি জানিয়েছে যে ইসরায়েলের স্থল অভিযানের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই সরবরাহ কঠিন করে তুলেছে।
এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন যে জিম্মি ইলান ওয়াইসের মৃতদেহ উদ্ধার করে ইসরায়েলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন যে এই অভিযানে অন্য এক জিম্মির মৃতদেহও উদ্ধার করা হয়েছে, যার নাম তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। নেতানিয়াহু বলেছেন যে ওয়াইসকে ৭ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখে হামাস হত্যা করেছিল এবং তার মৃতদেহ অপহরণ করা হয়েছিল। তার স্ত্রী ও কন্যাকেও অপহরণ করা হয়েছিল এবং তারা ২০২৩ সালের নভেম্বরে মুক্তি পেয়েছিল।
উল্লেখ্য, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৬২,০০০ ছাড়িয়েছে এবং অপুষ্টি ও অনাহারে মৃত্যুর হারও উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই অভিযানকে যুদ্ধের একটি নতুন ও ভয়াবহ পর্যায় হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং সতর্ক করেছেন যে গাজা নগরীতে সেনা অভিযান ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।