বাংলাদেশের নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৪ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা

সম্পাদনা করেছেন: Ирина iryna_blgka blgka

ঢাকা: বাংলাদেশের ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী সুষ্ঠু ও অবাধ করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ৪ মিলিয়ন ইউরো সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই সহায়তার আওতায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন মোতায়েনের পূর্বে পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য কারিগরি বিশেষজ্ঞদের একটি দল পাঠানো হবে।

ঢাকায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল-এর সাথে এক বৈঠক শেষে ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এই ঘোষণা দেন। রাষ্ট্রদূত মিলার জানান, একটি কারিগরি দল আগামী মাসে বাংলাদেশ সফর করবে এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন মোতায়েনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে কিনা তা মূল্যায়ন করবে। তিনি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহায়তা করার জন্য ইইউ-এর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, "আমরা একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, যার সময়সীমা ২০২৬ সালের প্রথম দিকে।" ইইউ এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ এবং নির্বাচন কমিশন উভয়কেই শক্তিশালী করতে চায়।

রাষ্ট্রদূত মিলার বাংলাদেশের নির্বাচন প্রস্তুতির উপর গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগের বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা, দক্ষতা এবং জবাবদিহিতার উপর ইইউ-এর মনোযোগের উপর জোর দেন। বাংলাদেশে একটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনকে সমর্থন করা ইইউ-এর একটি অগ্রাধিকার এবং এই বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। রাষ্ট্রদূত মিলার নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য অবিলম্বে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। ইইউ তার দক্ষতা কাজে লাগিয়ে নির্বাচনগুলো বিশ্বাসযোগ্য, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী এবং অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

এই ইইউ সহায়তা ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে সংঘটিত বিপ্লবের পর এসেছে, যা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পথ প্রশস্ত করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান পুনরুদ্ধারের এবং আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য সংস্কারের উপর কাজ করছে। সাধারণ নির্বাচন ২০২৫ সালের শেষ দিকে বা ২০২৬ সালের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বর্তমানে, ১৩তম জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে এবং নির্বাচন কমিশন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে প্রস্তুতির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য তার সংস্কার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন (EOMs) এবং নির্বাচন সহায়তা কর্মসূচিগুলো বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণের প্রচারের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকাণ্ডের একটি মৌলিক অংশ। ২০০২ সাল থেকে, ইইউ ৬৫টিরও বেশি দেশে ১৮০টিরও বেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন (EOMs) মোতায়েন করেছে। এই মিশনগুলো নির্বাচনী প্রক্রিয়ার একটি ব্যাপক, স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ মূল্যায়ন প্রদান করে, যা আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক মানদণ্ড অনুযায়ী গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য।

উৎসসমূহ

  • The Daily Star

  • Dhaka Tribune

  • Al Jazeera

  • Reuters

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।