আমেরিকার বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত, ভারতের উপর শুল্ক বৃদ্ধি
সম্পাদনা করেছেন: Svetlana Velgush
ভারত ও আমেরিকার মধ্যে নির্ধারিত বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত কর্তৃক রাশিয়ার তেল আমদানি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অগ্রগতি ব্যাহত হয়েছে এবং দুই দেশের মধ্যেকার ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। আলোচনাগুলি ২৫-২৯ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ভারতীয় পণ্যের উপর নতুন শুল্ক আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে এই বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। এই নতুন শুল্কের ফলে কিছু ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্কের হার ৫০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
এর আগে, ভারত ও আমেরিকার মধ্যেকার বাণিজ্য আলোচনা পাঁচটি পর্বের পর মতবিরোধের কারণে ব্যাহত হয়েছিল, বিশেষ করে ভারতের কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্য খাতের উদারীকরণ এবং রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করার বিষয়ে ভারতের অনীহা প্রধান কারণ ছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়ার তেল আমদানির জন্য ভারতকে দায়ী করে এই শুল্ক বৃদ্ধির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আত্মনির্ভরতা এবং ভারতীয় কৃষক, মৎস্যজীবী ও গবাদি পশু পালনকারীদের স্বার্থ রক্ষার উপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে দেশের স্বার্থ কোনোভাবেই আপোস করা হবে না। এই বাণিজ্য বিরোধের ফলে উভয় দেশের মধ্যেকার বাণিজ্য সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০২৪ সালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৯১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে, বর্তমান পরিস্থিতি এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। প্রায় ৭০% ভারতীয় পণ্য রপ্তানির উপর ৫০% শুল্ক আরোপের ফলে ভারতের বস্ত্র, রত্ন ও গহনা, সামুদ্রিক পণ্য, অটো যন্ত্রাংশ এবং কৃষি খাতের মতো শ্রম-নিবিড় ও উচ্চ-মূল্যের শিল্পগুলি বিশেষভাবে প্রভাবিত হতে পারে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আত্মনির্ভরতার উপর জোর দেওয়া হয়েছে, যা দেশের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক নির্ভরতা কমানোর একটি কৌশল। প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে এই আত্মনির্ভরতার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার অঙ্গীকার করেছেন। এই পদক্ষেপগুলি ভারতের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার এবং আন্তর্জাতিক চাপ মোকাবেলার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
উৎসসমূহ
Deutsche Welle
Reuters
Reuters
India Today
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
