১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে, তাইওয়ান প্রণালীতে মার্কিন ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস হিগিন্স এবং ব্রিটিশ ফ্রিগেট এইচএমএস রিচমন্ডের মতো নৌবাহিনীর জাহাজগুলির চলাচল একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই ঘটনাটি চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) নৌবাহিনীর প্রতিক্রিয়াকে উস্কে দিয়েছে, যারা এই জাহাজগুলির উপর নজরদারি করার জন্য নৌ ও বিমান বাহিনী মোতায়েন করেছে। চীনের পক্ষ থেকে এই ধরনের চলাচলকে "তাইওয়ান প্রণালীর শান্তি ও স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ণকারী" হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। একই সময়ে, চীনের নতুন বিমানবাহী রণতরী ফুজিয়ান একই প্রণালীতে সমুদ্র পরীক্ষা চালিয়েছে, যা এই অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান নৌ সক্ষমতা এবং উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিকে তুলে ধরেছে। এই ঘটনাটি তাইওয়ান প্রণালীর কৌশলগত গুরুত্ব এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক প্রভাবের প্রেক্ষাপটে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
ফুজিয়ান বিমানবাহী রণতরী, যা চীনের তৃতীয় এবং সবচেয়ে উন্নত রণতরী, এটি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ক্যাটাপাল্ট সিস্টেম সহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত। এই রণতরীটি ২০২৫ সালের মে মাস থেকে সমুদ্র পরীক্ষা শুরু করেছে এবং এটি চীনের নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণের একটি প্রতীক। এর আগে, ফুজিয়ান তার নবম সমুদ্র পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে, যা এটিকে পরিষেবাতে অন্তর্ভুক্ত করার চূড়ান্ত পর্যায় নির্দেশ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য উভয়ই আন্তর্জাতিক আইন ও নৌ চলাচলের স্বাধীনতা বজায় রাখার উপর জোর দিয়েছে। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে যে তাদের জাহাজগুলির এই চলাচল আন্তর্জাতিক আইন ও নিয়মাবলী সম্পূর্ণরূপে মেনে চলেছে। মার্কিন নৌবাহিনীর সপ্তম ফ্লিটও এই মিশনটিকে একটি রুটিন ট্রানজিট হিসাবে বর্ণনা করেছে, যা আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে পরিচালিত হয়েছে।
অন্যদিকে, চীন এই চলাচলকে ভুল সংকেত পাঠানো এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছে। চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-এর ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের মুখপাত্র সিনিয়র কর্নেল শি ইয়ি বলেছেন যে তাদের বাহিনী সর্বদা উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং চীনের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই ঘটনাটি তাইওয়ান প্রণালীর উপর চীনের সার্বভৌমত্বের দাবি এবং আন্তর্জাতিক জলসীমার স্বাধীনতা নিয়ে চলমান বিতর্ককে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এই অঞ্চলের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সকল পক্ষের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা এবং বোঝাপড়া অত্যন্ত জরুরি।