ট্রাম্প প্রশাসনের পাসপোর্ট নীতি: সুপ্রিম কোর্টে আবেদন
সম্পাদনা করেছেন: Tatyana Hurynovich
ট্রাম্প প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন জমা দিয়েছে, যেখানে পাসপোর্টগুলিতে জন্মসূত্রে নির্ধারিত জৈবিক লিঙ্গ প্রতিফলিত করার নীতি পুনঃস্থাপন করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে নন-বাইনারি এবং ইন্টারসেক্স ব্যক্তিদের জন্য 'এক্স' লিঙ্গ মার্কারের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে।
এই নীতিটি পূর্ববর্তী বাইডেন প্রশাসনের ২০২২ সালের নীতিমালার একটি বিপরীত পরিবর্তন। বাইডেন প্রশাসন পাসপোর্ট আবেদনকারীদের জন্য 'এম', 'এফ', বা 'এক্স' লিঙ্গ মার্কার নির্বাচনের সুযোগ দিয়েছিল। জানুয়ারি ২০২৫-এ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে এই পরিবর্তন আনেন, যেখানে বলা হয় যে সরকার শুধুমাত্র জন্মগতভাবে নির্ধারিত পুরুষ বা মহিলা লিঙ্গকেই স্বীকৃতি দেবে। এর ফলে স্টেট ডিপার্টমেন্ট 'এক্স' মার্কার সহ পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকরণ স্থগিত করে এবং আবেদনপত্রে শুধুমাত্র 'এম' বা 'এফ' মার্কার অন্তর্ভুক্ত করে।
এই নীতির বিরুদ্ধে সাতজন ট্রান্সজেন্ডার এবং নন-বাইনারি ব্যক্তি একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে তারা বলেন যে এই নীতি তাদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করে। এপ্রিল ২০২৫-এ, মার্কিন জেলা বিচারক জুলিয়া কোবিক এই নীতির প্রয়োগে একটি প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ট্রাম্প প্রশাসন এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে এবং সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ সলিসিটর জেনারেল ডি. জন সয়ার সুপ্রিম কোর্টকে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি বলেন যে এই নীতি প্রশাসনের বৈদেশিক নীতি এবং লিঙ্গ সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক ধারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সুপ্রিম কোর্টের এই আবেদনের সিদ্ধান্ত এখনও মুলতুবি রয়েছে। এই মামলার ফলাফল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রান্সজেন্ডার, নন-বাইনারি এবং ইন্টারসেক্স ব্যক্তিদের অধিকার এবং স্বীকৃতির উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। এটি সরকারি পরিচয় নথিতে লিঙ্গ স্বীকৃতির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করতে পারে।
ন্যাশনাল সেন্টার ফর ট্রান্সজেন্ডার ইক্যুইটির ২০১৫ সালের ইউএস ট্রান্স সার্ভে অনুসারে, মাত্র ১১% ট্রান্সজেন্ডার উত্তরদাতার তাদের পরিচিতি নথিতে পছন্দের নাম এবং লিঙ্গ ছিল। দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি উত্তরদাতা জানিয়েছেন যে তাদের কোনও আইডিতেই পছন্দের নাম এবং লিঙ্গ ছিল না, যার ফলে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হয়রানি, পরিষেবা প্রত্যাখ্যান বা এমনকি আক্রমণের শিকার হয়েছেন। এই পরিসংখ্যানগুলি সঠিক পরিচয়ের গুরুত্ব তুলে ধরে।
এই আইনি চ্যালেঞ্জগুলি সরকারি স্বীকৃতি এবং ট্রান্সজেন্ডার ও নন-বাইনারি ব্যক্তিদের অধিকারের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নির্দেশ করে। এই বিষয়গুলি কেবল প্রশাসনিক পরিবর্তন নয়, বরং মর্যাদা, নিরাপত্তা এবং সামাজিক অংশগ্রহণের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ।
উৎসসমূহ
Al Jazeera Online
SCOTUSblog
NBC4 Washington
CBS News
American Civil Liberties Union
JDJournal
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
