সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সোয়েদা প্রদেশে গত ১৩ই জুলাই ড্রুজ মিলিশিয়া এবং সুন্নি বেদুইন উপজাতিদের মধ্যে সংঘর্ষের পর থেকে সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই সংঘর্ষে ড্রুজ মিলিশিয়া এবং সরকারি বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে, যার ফলে প্রায় ১,৬০০ জনের মৃত্যু হয়, যাদের অধিকাংশই ছিলেন ড্রুজ বেসামরিক নাগরিক। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, গত ১৬ই আগস্ট, ২০২৫ তারিখে সোয়েদা এবং এর আশেপাশের শহরগুলোতে ড্রুজ সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এটি ছিল গত জুলাই মাসের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর বৃহত্তম সমাবেশ এবং ড্রুজদের আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবিতে এটিই প্রথম বিক্ষোভ।
বিক্ষোভকারীরা সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে এবং ড্রুজ সম্প্রদায়ের উপর সংঘটিত নৃশংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায়। কিছু বিক্ষোভকারী ইসরায়েলের পতাকা উড়িয়ে ইসরায়েলের হস্তক্ষেপের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, কারণ জুলাই মাসের সংঘর্ষের সময় ইসরায়েল ড্রুজদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। সিরিয়ার যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা, সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস, জানিয়েছে যে বিক্ষোভকারীরা দামেস্কের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ড্রুজদের উপর সংঘটিত অত্যাচারের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি করেছে। সিরিয়ার ড্রুজ সম্প্রদায় ঐতিহাসিকভাবে একটি স্বতন্ত্র ধর্মীয় গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত, যাদের সিরিয়া, লেবানন এবং ইসরায়েলে উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যা রয়েছে। সিরিয়ার সোয়েদা প্রদেশে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। ১৯২৫ সালে ড্রুজ নেতা সুলতান আল-আত্রাশ ফরাসি শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এই বিক্ষোভগুলি সিরিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সংখ্যালঘু অধিকারের প্রশ্নটিকে আরও সামনে নিয়ে এসেছে। সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে, যা আগামী তিন মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই ঘটনাগুলো সিরিয়ার জাতিগত ও ধর্মীয় বিভাজন এবং দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের পর শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের চ্যালেঞ্জগুলোকে তুলে ধরেছে।