সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছে কিশোয়া ব্যারাক এলাকায় ইসরায়েলের বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। গত ২৭ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে এই হামলা চালানো হয়, যা গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় ঘটনা। এই হামলা এমন এক সময়ে হয়েছে যখন সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে নিরাপত্তা আলোচনা চলছে। কিশোয়া এলাকা এবং এর সংলগ্ন জাবাল মানিয়া ঐতিহাসিকভাবে আসাদ শাসনের সময় ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হত। এই হামলার ঘটনা সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতির উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের উপর স্পষ্ট আঘাত বলে অভিহিত করেছে। এই ঘটনাপ্রবাহ এমন এক সময়ে ঘটছে যখন সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনা চলছে। উভয় দেশই উত্তেজনা প্রশমন এবং স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা করছে।
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারা জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলের সাথে একটি নিরাপত্তা চুক্তির বিষয়ে আলোচনায় অগ্রসর হচ্ছেন, যা ১৯৭৪ সালের যুদ্ধবিরতি রেখার উপর ভিত্তি করে হবে। এই চুক্তির মাধ্যমে সিরিয়ার গোলান মালভূমিকে নিরস্ত্রীকরণ, ইসরায়েলের জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে এমন অস্ত্রের প্রবেশ নিষিদ্ধকরণ এবং সিরিয়ার পুনর্গঠনের জন্য মার্কিন ও আরব দেশগুলোর সহায়তা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। এই আলোচনায় ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের প্রভাব কমানোর বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।
তবে, এই বিমান হামলাগুলো চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টার উপর প্রশ্ন তুলেছে। একদিকে যেমন নিরাপত্তা আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা চলছে, অন্যদিকে সামরিক হামলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। এই দ্বিমুখী পরিস্থিতি আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এই ঘটনাগুলো থেকে বোঝা যায় যে, মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং এখানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জন করা একটি দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়া।