রাশিয়া এবং বেলারুশ তাদের যৌথ সামরিক মহড়া, জাপাদ-২০২৫ শুরু করেছে। এই মহড়ার মূল উদ্দেশ্য হলো ইউনিয়ন স্টেটের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা পরীক্ষা করা এবং শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করে সীমান্ত সুরক্ষিত রাখা। মহড়াটি উভয় দেশের প্রশিক্ষণ পরিসীমা এবং বাল্টিক ও বেরেন্টস সাগরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মহড়াটি ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ থেকে শুরু হয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত চলবে। এটি বেলারুশ এবং রাশিয়ার বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে, সেইসাথে বাল্টিক ও বেরেন্টস সাগরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে, বেলারুশের কর্মকর্তারা ১৩,০০০ সৈন্য অংশগ্রহণের কথা বললেও, পরে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা প্রায় ৭,০০০-৮,০০০ জনে নামিয়ে আনা হয়। এটি জাপাদ-২০২১ এর ২,০০,০০০ সৈন্যের তুলনায় একটি উল্লেখযোগ্য হ্রাস।
জাপাদ-২০২৫ রাশিয়ার সেপ্টেম্বর মাসে পরিকল্পিত ছয়টি সামরিক মহড়ার মধ্যে একটি। এই মহড়াটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার উপর কী প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক এই মহড়াকে "অত্যন্ত আগ্রাসী" বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে এটি পোল্যান্ডের সীমান্তের খুব কাছে অনুষ্ঠিত হবে। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা সচিব জন হিলি রাশিয়ার পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় ন্যাটো-র প্রচেষ্টাকে যুক্তরাজ্যের সমর্থনের উপর জোর দিয়েছেন।
এই মহড়াটি বর্তমান সময়ে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক কারণ ইউরোপে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মহড়াগুলো ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর খুব কাছাকাছি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়ায়, ন্যাটো তার পূর্ব সীমান্তে প্রতিরক্ষা জোরদার করার জন্য "ইস্টার্ন সেন্ট্রি" নামে একটি নতুন উদ্যোগ চালু করেছে। এই উদ্যোগটি ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য মিত্র দেশগুলোর অংশগ্রহণ করবে। এটি উন্নত নজরদারি, স্থল-ভিত্তিক বিমান প্রতিরক্ষা এবং মিত্রদের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান বৃদ্ধি করবে।
ঐতিহাসিকভাবে, জাপাদ-২০২১ মহড়ায় প্রায় ২,০০,০০০ সৈন্য জড়িত ছিল, যা ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রার আক্রমণের আগে একটি বড় সৈন্য সমাবেশের সূচনা করেছিল। সম্প্রতি, পোল্যান্ড তার ভূখণ্ডে রাশিয়ার একাধিক ড্রোন প্রবেশের খবর দিয়েছে এবং ন্যাটো-র সহায়তায় সেগুলো গুলি করে নামানো হয়েছে। এই ঘটনাগুলো পূর্ব ইউরোপে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ন্যাটো-র "ইস্টার্ন সেন্ট্রি" অপারেশনটি এই অঞ্চলে একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে, যা যেকোনো সম্ভাব্য উস্কানির বিরুদ্ধে জোটের প্রস্তুতি প্রদর্শন করে।