২০২৫ সালের ২৭ অক্টোবর সোমবার রাতে রাজধানী অঞ্চলে ব্যাপক সংখ্যক চালকবিহীন বিমান (ড্রোন) দ্বারা আক্রমণ চালানো হয়। এই হুমকির মোকাবিলায় রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (পিভিও) অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করে, যা ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যা থেকেই শুরু হওয়া এই হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়। এই ঘটনা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উচ্চ সতর্কতার প্রয়োজনীয়তা আবারও প্রমাণ করে।
মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন নিয়মিতভাবে জনগণের কাছে ঘটনার অগ্রগতি সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করেছেন। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যা থেকে ২৭ অক্টোবর সকাল পর্যন্ত, সরাসরি মস্কোর দিকে আসা মোট ৩৪টি ড্রোনকে পিভিও বাহিনী সফলভাবে ধ্বংস করেছে। অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের (মোদ) প্রতিবেদন অনুসারে, সারা রাত ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আকাশসীমা থেকে মোট ১৯৩টি ইউক্রেনীয় বিমান-ধরনের চালকবিহীন বিমানকে প্রতিহত করা হয়েছে। এই বিশাল সংখ্যাটি আক্রমণের ব্যাপকতা নির্দেশ করে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এই ব্যাপক আক্রমণে বিভিন্ন অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছিল। এর মধ্যে কালুগা অঞ্চলের আকাশে ৪২টি, মস্কো অঞ্চলের ওপর দিয়ে যাওয়া ৪০টি এবং তুলা অঞ্চলের ওপর দিয়ে যাওয়া ৩২টি ড্রোনকে সফলভাবে গুলি করে নামানো হয়। এই পরিসংখ্যান সামগ্রিক প্রতিরক্ষা প্রচেষ্টার তীব্রতা তুলে ধরে এবং দেখায় যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলি কত দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম হয়েছিল।
রাজধানীর কাছাকাছি এলাকায় হুমকি নিষ্ক্রিয় করার লক্ষ্যে পিভিও-এর পদক্ষেপের ফলস্বরূপ ডোমোদোদোভো এবং ঝুকোভস্কি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে সাময়িকভাবে তাদের কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হতে হয়েছিল। উড়ানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিমান গ্রহণ ও নির্গমনের ওপর এই সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে, সরাসরি হুমকি দূর হওয়ার পর, ২০২৫ সালের ২৭ অক্টোবর সকালের মধ্যেই বিমান চলাচল সম্পূর্ণরূপে স্বাভাবিক হয়ে আসে, যা দ্রুত স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে আসার ইঙ্গিত দেয়। জানা গেছে, নিরাপত্তার কারণে বেশ কয়েকটি ফ্লাইটকে বিকল্প বিমানবন্দরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
ড্রোন ধ্বংসাবশেষ পতিত হওয়ার স্থানগুলিতে জরুরি পরিষেবাগুলি দ্রুততার সঙ্গে কাজ করেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। মস্কোর মেয়র যদিও ড্রোন ধ্বংসের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তবে রাজধানী শহরে ক্ষয়ক্ষতির বা হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আক্রান্ত অন্যান্য অঞ্চল, যেমন তুলা, ভোরোনেজ এবং রোস্তভ অঞ্চলের কর্তৃপক্ষও বিমান হামলা প্রতিহত করার ফলে কোনো হতাহত বা ভূমিতে ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই বলে জানিয়েছে। এই ধরনের ঘটনা, যা টানা কয়েক রাত ধরে ঘটছে, তা পরিবর্তিত বাহ্যিক কারণগুলির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলির ক্রমাগত প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দেয়।
