১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর চারটি ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনীকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠন (FTO) হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই পদক্ষেপটি তাদের পূর্বেকার স্পেশালি ডিজাইনড গ্লোবাল টেরোরিস্ট (SDGT) তকমা থেকে উন্নীত করেছে, যা তাদের কার্যকলাপ এবং আর্থিক নেটওয়ার্ককে বাধাগ্রস্ত করার জন্য আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা ও আইনি বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ঘোষিত চারটি গোষ্ঠী হলো হারাকাত আল-নুজা, কাতা’ইব সাঈদ আল-শুহাদা, হারাকাত আনসার আল্লাহ আল-আওয়াফিয়া এবং কাতা’ইব আল-ইমাম আলী।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জোর দিয়ে বলেছেন যে এই মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে এবং মার্কিন ও জোট বাহিনীর ঘাঁটিগুলোতে হামলার জন্য দায়ী। তিনি অভিযোগ করেন যে তারা প্রায়শই তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি গোপন করার জন্য প্রতারণামূলক কৌশল ব্যবহার করে। মার্কিন সরকার তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে যে ইরান বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষক সন্ত্রাসী এবং এই গোষ্ঠীগুলোকে ইরাক ও বৃহত্তর অঞ্চলে অস্থিতিশীল কার্যকলাপ চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন প্রদান করে।
এই ঘোষণাটি ইরানের উপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির মার্কিন কৌশলের একটি ধারাবাহিকতা, যার লক্ষ্য দেশটির শাসনব্যবস্থা এবং তার প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর আয়ের উৎস বন্ধ করা। উদাহরণস্বরূপ, কাতা’ইব সাঈদ আল-শুহাদা ২০২৩ সালেই SDGT তকমা পেয়েছিল, যা এই সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান পদক্ষেপের একটি ইঙ্গিত। হারাকাত আনসার আল্লাহ আল-আওয়াফিয়া জর্ডানের টাওয়ার ২২-এ একটি ড্রোন হামলায় জড়িত ছিল, যেখানে তিনজন মার্কিন সেনার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল। এই পদক্ষেপগুলো আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি মোকাবিলা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষার প্রতি তাদের অবিচল অঙ্গীকারকে তুলে ধরে।
আরও বিস্তৃত প্রেক্ষাপটে দেখা যায় যে ইরান দীর্ঘকাল ধরে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে তার আঞ্চলিক এজেন্ডা এগিয়ে নিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে, যা প্রায়শই "অ্যাক্সিস অফ রেজিস্টেন্স" নামে পরিচিত। এই গোষ্ঠীগুলো ধারাবাহিকভাবে মার্কিন ও ইসরায়েলি স্বার্থকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, এবং ২০২৩ সালের অক্টোবরের ঘটনার পর থেকে হামলার হার ও পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। মার্কিন নীতি এই ধরনের কার্যকলাপ প্রতিরোধ ও প্রতিক্রিয়া জানানোর পাশাপাশি একটি বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাত এড়ানোর চেষ্টা করে।
এই ঘোষণাগুলো এই ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর আর্থিক ও কার্যক্ষম সক্ষমতা ভেঙে ফেলার একটি ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ, যা এই ধরনের অস্থিতিশীল কার্যকলাপের জন্য ইরান ও তার প্রক্সিগুলোকে জবাবদিহি করার মার্কিন দৃঢ়তাকে শক্তিশালী করে। এই পদক্ষেপটি মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব মোকাবিলা এবং নিরাপত্তা জোরদার করার বৃহত্তর মার্কিন প্রচেষ্টার সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা এই জটিল ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার ক্ষেত্রে একটি ধারাবাহিক ও কৌশলগত পদ্ধতির প্রতিফলন।