বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫-এর ভোরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ এক ভয়াবহ রুশ বিমান হামলার শিকার হয়েছে। এই সমন্বিত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত চারজন নিহত এবং ২৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। নিহতদের মধ্যে দুজন শিশুও রয়েছে।
রাশিয়ার এই হামলা শহরটির সাতটি জেলার প্রায় ২০টি স্থানে আঘাত হেনেছে, যার ফলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ এবং উদ্ধারকারী দলের প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি শপিং সেন্টার এবং দর্নিটস্কি জেলার একটি পাঁচতলা আবাসিক ভবন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারের জন্য জরুরি পরিষেবা দলগুলো নিরলসভাবে কাজ করছে। এই হামলায় প্রায় ১০০টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হাজার হাজার জানালা ভেঙে গেছে।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইগর ক্লিমেনকো এবং কিয়েভ পৌর প্রশাসনের প্রধান তিমুর তকাচেঙ্কো হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রাশিয়া যদি শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক প্রতিশ্রুতি না দেখায়, তবে বিশ্বকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
এই হামলাটি গত ১৫ আগস্ট আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে শান্তি আলোচনার পর রাশিয়ার পক্ষ থেকে কিয়েভের উপর প্রথম বড় ধরনের সমন্বিত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। যদিও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছিল, তবে এই হামলার ফলে শান্তি আলোচনার কার্যকারিতা এবং রাশিয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক কাজা কালাস মন্তব্য করেছেন যে, ট্রাম্পের এই শান্তি প্রচেষ্টা পুতিনকে হাসির খোরাক জুগিয়েছে এবং এটি ক্রেমলিনের ফাঁদে পা ফেলার সামিল। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, রাশিয়া শান্তি চায় না এবং পুতিন তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। এই হামলা ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং চলমান সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রয়োজনীয়তাকে আবারও সামনে এনেছে। এটি স্পষ্ট যে, কূটনৈতিক আলোচনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি করা ইউক্রেনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। রাশিয়ার এই আগ্রাসন কেবল বেসামরিক নাগরিক ও অবকাঠামোর উপরই আঘাত হানছে না, বরং আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও একটি বড় হুমকি।