২০২৫ সালের ১৮ মার্চ রাতে গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি অত্যন্ত দ্রুততার সাথে খারাপের দিকে মোড় নেয়। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (ЦАХАЛ/আইডিএফ) এই ছিটমহলের গুরুত্বপূর্ণ জনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলিতে একের পর এক তীব্র ও ব্যাপক বিমান হামলা চালায়। এই সামরিক পদক্ষেপগুলি ছিল জিম্মি মুক্তি সংক্রান্ত দীর্ঘস্থায়ী আলোচনা সংকটের সরাসরি প্রতিক্রিয়া। হামাস জিম্মি করে রাখা ইসরায়েলি নাগরিকদের মুক্তি দিতে বারবার অস্বীকার করায় এবং মার্কিন দূতসহ আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের উত্থাপিত প্রস্তাবগুলি প্রত্যাখ্যান করায় এই সংকট আরও গভীর হয়েছিল।
ব্যাপক এই বিমান হামলাগুলি গাজা শহর, দেইর-এল-বালাহ, খান ইউনিস এবং রাফাহ—এই চারটি প্রধান এলাকাকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়। বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী, পূর্ববর্তী যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকে এটিই ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী এবং ধ্বংসাত্মক আক্রমণ। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ (Исраэль Кац) প্রকাশ্যে নিশ্চিত করেছেন যে, সন্ত্রাসী অবকাঠামো সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা এবং বন্দীদের মুক্তির দাবিতে হামাসকে বাধ্য করার চূড়ান্ত লক্ষ্য নিয়ে সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের বিষয়ে তাদের সরকার দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু’র (Биньямина Нетаньяху) কার্যালয় থেকে জানানো হয়, হামাসের পক্ষ থেকে বারবার সমঝোতার পথ থেকে সরে আসা এবং 'পুনরাবৃত্তিমূলক প্রত্যাখ্যানের' কারণেই সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। এদিকে, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা ডোনাল্ড ট্রাম্পও (Дональд Трамп) এই বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে, জিম্মি বিনিময়ের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির সময়কাল বাড়ানোর সুযোগ থাকা সত্ত্বেও হামাস সচেতনভাবে সংঘাত চালিয়ে যাওয়ার পথ বেছে নিয়েছে।
অন্যদিকে, লেবানন-ভিত্তিক শক্তিশালী গোষ্ঠী 'হিজবুল্লাহ' (Хезболла) ইসরায়েলের এই সামরিক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা এটিকে সরাসরি 'অপরাধ' হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এই নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাত সামরিক চাপ প্রয়োগ এবং কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানের মধ্যেকার মৌলিক ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই অঞ্চলে চলমান উত্তেজনা আরও বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক বিষয়গুলির সাথে সম্পর্কিত, যার মধ্যে অন্যতম হলো ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা।
সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি সত্ত্বেও, ইসরায়েলের রাজধানী জেরুজালেমে (Иерусалим) উচ্চ-পর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত ছিল। সেই বৈঠকে প্রতিক্রিয়ার মাত্রা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্তটি ইঙ্গিত দেয় যে আইডিএফের অপারেশনাল কার্যক্রম আরও জোরদার হতে চলেছে। এটি স্পষ্ট করে যে ইসরায়েল সামরিক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে তার ঘোষিত লক্ষ্য অর্জনে বদ্ধপরিকর, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।