জার্মানি সামরিক নিয়োগের নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে

সম্পাদনা করেছেন: Татьяна Гуринович

ইউরোপের পরিবর্তিত নিরাপত্তা পরিস্থিতির মোকাবিলায় জার্মানি তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সামরিক সেবায় একটি নতুন মডেল চালু করতে যাচ্ছে। এই মডেলে স্বেচ্ছাসেবী সামরিক সেবার পাশাপাশি প্রয়োজনে বাধ্যতামূলক নিয়োগের বিধানও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হলো জার্মানির প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ন্যাটো (NATO)-এর troop increase-এর প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা।

নতুন আইন অনুযায়ী, ২০২৬ সাল থেকে একটি স্বেচ্ছাসেবী সামরিক সেবা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই ব্যবস্থার অধীনে, ১৮ বছর বয়সী সকল জার্মান নাগরিককে সামরিক বাহিনীতে যোগদানের আগ্রহ এবং শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য একটি চিঠি ও প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে। পুরুষদের জন্য এই প্রশ্নপত্রের উত্তর দেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও, নারীদের জন্য এটি ঐচ্ছিক থাকবে। প্রথম পর্যায়ে, প্রায় ৫,০০০ স্বেচ্ছাসেবককে সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচন করা হবে, যাদের মেয়াদ ৬ থেকে ২৩ মাস পর্যন্ত হতে পারে। এই নতুন মডেলের প্রাথমিক ব্যয় আনুমানিক ১.৪ বিলিয়ন ইউরো বার্ষিক ধরা হয়েছে। তবে, যদি স্বেচ্ছাসেবী সেবার মাধ্যমে পর্যাপ্ত সংখ্যক তরুণ-তরুণীকে আকৃষ্ট করা সম্ভব না হয়, তবে জার্মান সরকার বাধ্যতামূলক সামরিক নিয়োগ পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই বিধানটি নতুন আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যদিও এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে না। এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা জার্মান সংসদের (Bundestag) হাতে থাকবে।

এই সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হলো বুন্দেসভার (Bundeswehr)-এর সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা। বর্তমানে বুন্দেসভার-এর সদস্য সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৮৩ হাজার, যা ন্যাটো-র প্রয়োজনীয় ৬০,০০০ সৈন্য বৃদ্ধির লক্ষ্যের তুলনায় কম। জার্মানি ২০৩৫ সালের মধ্যে পেশাদার সৈন্যের সংখ্যা ১ লক্ষ ৮২ হাজার থেকে ২ লক্ষ ৬০ হাজারে এবং রিজার্ভ সৈন্যের সংখ্যা ৬০ হাজার থেকে ২ লক্ষ হাজারে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই সংস্কারের পাশাপাশি, জার্মানি তার রিজার্ভ বাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্যও কাজ করছে। তবে, ডেটা সুরক্ষা আইন এবং প্রাক্তন সৈন্যদের যোগাযোগের তথ্য সংগ্রহে জটিলতার কারণে এই প্রক্রিয়াটি চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাক্তন সৈন্যদের খুঁজে বের করতে এবং তাদের পুনরায় সক্রিয় করতে ডেটা সুরক্ষা বিধি-নিষেধ একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার ডেটা সুরক্ষা নিয়মাবলী পর্যালোচনা করছে।

জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস (Boris Pistorius) জানিয়েছেন যে, এই সংস্কারের মাধ্যমে জার্মানি ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গড়ে তুলতে চায়। এই উদ্যোগটি ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর ইউরোপের পরিবর্তিত নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়া হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস (Olaf Scholz) ইউরোপের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে জার্মানির নেতৃত্ব দেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এবং বলেছেন যে, ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব মূলত ইউরোপীয়দেরই। এই পদক্ষেপটি জার্মানির প্রতিরক্ষা নীতিতে একটি বড় পরিবর্তন আনবে এবং ইউরোপীয় নিরাপত্তা কাঠামোতে দেশটির ভূমিকাকে আরও শক্তিশালী করবে।

উৎসসমূহ

  • Deutsche Welle

  • Financial Times

  • Associated Press

  • Deutsche Welle

  • Deutsche Welle

  • Deutsche Welle

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।