ইসরায়েল গাজা সিটিতে সামরিক অভিযান শুরু করেছে, যুদ্ধবিরতি আলোচনা ও মানবিক সংকট চলছে
সম্পাদনা করেছেন: Tatyana Hurynovich
আগস্ট ২০, ২০২৫ তারিখে, ইসরায়েল গাজা সিটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার লক্ষ্যে তাদের সামরিক অভিযান 'অপারেশন গিদিয়নস চ্যারিয়টস ২' শুরু করেছে। এই পদক্ষেপটি পূর্ববর্তী যুদ্ধবিরতি চুক্তির ব্যর্থতার পর একটি উল্লেখযোগ্য উত্তেজনা বৃদ্ধি করেছে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফ্ফি ডেফ্রিনের মতে, ইসরায়েলি সৈন্যরা এখন শহরের উপকণ্ঠে অবস্থান করছে। এই স্থল অভিযানের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে, ইসরায়েল কয়েক হাজার রিজার্ভ সৈন্যকে তলব করেছে, যাদের মোতায়েন সেপ্টেম্বরে নির্ধারিত আছে।
এই সামরিক অগ্রগতির সমান্তরালে, ইসলামপন্থী গোষ্ঠী হামাস আগস্ট ১৮, ২০২৫ তারিখে আরব মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাবিত একটি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। এই প্রস্তাবে জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে, ইসরায়েল এখনও এই প্রস্তাবের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসকে পরাজিত করার জন্য এই অভিযানের গতি বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছেন।
এদিকে, গাজা উপত্যকায় মানবিক পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্চ মাস থেকে গাজায় অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা তিনগুণ বেড়েছে, এবং গাজা সিটির প্রতি তিন শিশুর মধ্যে একজন অপুষ্টিতে ভুগছে। ইউনিসেফের তথ্য অনুসারে, মে মাসে একা ৫,১১৯ জন শিশু তীব্র অপুষ্টির জন্য চিকিৎসা পেয়েছে, যা এপ্রিলের তুলনায় প্রায় ৫০% বেশি। জুলাই মাসটি গাজায় শিশুদের অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ মাস ছিল, যেখানে পাঁচ বছরের কম বয়সী ২৪ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে, যা ২০২৫ সালের মোট মৃত্যুর ৮৫%।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিস্থিতির উপর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন এবং একটি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের উপর জোর দিয়েছেন। ফ্রান্সও এই অভিযানের ফলে একটি ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এই সংঘাতের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনার অগ্রগতি এবং গাজার মানবিক সংকট বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। এই পরিস্থিতি একটি জটিল ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে, যেখানে নিরাপত্তা উদ্বেগ এবং বেসামরিক জনগণের কল্যাণ রক্ষার মধ্যে একটি সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রাখা অপরিহার্য। এই সংকটময় মুহূর্তে, একটি স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং কূটনৈতিক সমাধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উৎসসমূহ
Deutsche Welle
Reuters
CNBC
Reuters
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
