ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (DIU) গত ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে রাশিয়ার উফা শহরে অবস্থিত বাশনাফ্ট-নোভোইলের তেল শোধনাগারে একটি অতর্কিত ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এই হামলাটি ছিল সংঘাতের অন্যতম গভীরতম আক্রমণ, যা প্রায় ১,৪০০ কিলোমিটার (৮৭০ মাইল) দূর থেকে পরিচালিত হয়েছিল। প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে, এই আক্রমণে শোধনাগারের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো, বিশেষ করে ভ্যাকুয়াম ডিস্টিলেশন ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ড্রোন উড়তে শোনার পর বিস্ফোরণ এবং শোধনাগারে একটি বড় অগ্নিকাণ্ডের খবর দিয়েছেন।
এই ঘটনার পর, আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ শহরে "ড্রোন হুমকি" সতর্কতা জারি করে, উফা বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয় এবং মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এই হামলাটি রাশিয়ার জ্বালানি খাতের উপর ইউক্রেনের ক্রমবর্ধমান সক্ষমতা এবং কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। বাশনাফ্ট-নোভোইলের মতো একটি বৃহৎ শোধনাগার, যা প্রতিদিন প্রায় ১৬৮,০০০ ব্যারেল তেল প্রক্রিয়াকরণ করতে সক্ষম, তা লক্ষ্যবস্তু করার মাধ্যমে ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের অর্থায়নের ক্ষমতাকে আঘাত করার চেষ্টা করছে। এই ধরনের আক্রমণগুলি কেবল রাশিয়ার অর্থনীতিকেই প্রভাবিত করে না, বরং যুদ্ধের প্রভাবকে আরও বিস্তৃত করে তোলে।
এই ঘটনার আগে, গত ৯ সেপ্টেম্বর রাশিয়ার বেলগোরোদ অঞ্চলে তেল সংরক্ষণের ট্যাঙ্কগুলিতে ড্রোন হামলা হয়েছিল, যা এই ধরনের আক্রমণের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা নির্দেশ করে। ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা এই ধরনের অপারেশনে তাদের জড়িত থাকার বিষয়ে সাধারণত নীরবতা বজায় রাখে, যা তাদের কৌশলগত অস্পষ্টতা বজায় রাখার একটি অংশ। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন যে এই ধরনের আক্রমণগুলি রাশিয়ার তেল প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতাকে প্রায় ১০% পর্যন্ত হ্রাস করেছে এবং বিশ্বব্যাপী তেলের বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে। এই ঘটনাগুলি যুদ্ধের কৌশলগত দিকটিকে আরও জটিল করে তুলেছে, যেখানে উভয় পক্ষই গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করছে। এই ধরনের গভীর-পাল্লার ড্রোন হামলা ইউক্রেনের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং যুদ্ধের ময়দানে তাদের অভিযোজন ক্ষমতাকে তুলে ধরে।