লেবাননের সরকার কর্তৃক অনুমোদিত একটি নতুন নিরস্ত্রীকরণ পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে হিজবুল্লাহ। সংগঠনটির উপ-মহাসচিব শেখ নাইম কাসেম বলেছেন যে এই পরিকল্পনাটি ইসরায়েলের স্বার্থ রক্ষা করে এবং লেবাননের প্রতিরক্ষাকে দুর্বল করে তোলে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এবং লেবাননের ভূমি থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে না যাওয়া পর্যন্ত হিজবুল্লাহ কোনো জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল নিয়ে আলোচনা করবে না।
এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায়, ইরানের কর্মকর্তা আলী লারিজানি অভিযোগ করেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই পরিকল্পনা চাপিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন যে যেকোনো নিরস্ত্রীকরণ লেবাননের অভ্যন্তরীণ আলোচনার মাধ্যমে হওয়া উচিত এবং ইরান ইসরায়েলি হুমকির বিরুদ্ধে লেবাননকে সমর্থন করবে। অন্যদিকে, লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন বৈরুতে আলী লারিজানির সাথে এক বৈঠকে জাতীয় সার্বভৌমত্বের উপর জোর দিয়ে বিদেশী হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে লেবাননের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি ইরানের কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেছেন যে এটি লেবাননের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সহায়ক নয়। এই ঘটনাটি লেবাননের ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং মধ্যপ্রাচ্যে হিজবুল্লাহর মতো রাষ্ট্র-বহির্ভূত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির ভূমিকা নিয়ে চলমান বিতর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছে। ২০১৪ সালের নভেম্বরে ইসরায়েলের সাথে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর থেকে আঞ্চলিক শক্তিগুলির প্রভাব এবং লেবাননের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিভাজন এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ইসরায়েলের সাথে ১৪ মাসের যুদ্ধ লেবাননে ব্যাপক হতাহত, বাস্তুচ্যুতি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়েছিল, যার ফলে প্রায় ১ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল এবং ১১ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছিল। হিজবুল্লাহর এই প্রত্যাখ্যান এবং ইরানের সমর্থন লেবাননের নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। যদিও লেবাননের সরকার অস্ত্র কেবলমাত্র রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করার জন্য সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে, হিজবুল্লাহর অনড় অবস্থান এবং তাদের সম্ভাব্য প্রতিবাদের হুমকি পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। এই অচলাবস্থা লেবাননের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আঞ্চলিক ক্ষমতার ভারসাম্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।