হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার পর ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি পুনর্বহালের ঘোষণা দিয়েছে

লেখক: Татьяна Гуринович

গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা হয়েছে বলে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ বা ЦАХАЛ) আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে। হামাস আন্দোলনের বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে সুনির্দিষ্ট ও কঠোর আঘাত হানার পরপরই এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এই সামরিক পদক্ষেপগুলিকে সম্প্রতি উভয় পক্ষের মধ্যে হওয়া বোঝাপড়ার গুরুতর লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে একটি অবশ্য প্রয়োজনীয় জবাব হিসাবে চিহ্নিত করেছে।

বিশেষত, ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে গাজায় একটি আক্রমণ চালানোর অভিযোগ এনেছে, যার ফলস্বরূপ একজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হন। এছাড়াও, নিহত জিম্মিদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে নির্ধারিত শর্তাবলী লঙ্ঘনের অভিযোগও আনা হয়েছে, যা ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এই সামরিক পদক্ষেপকে ন্যায্য প্রমাণ করে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ব্যক্তিগতভাবে এই প্রতিশোধমূলক হামলা পরিচালনার নির্দেশ দেন। তিনি অত্যন্ত কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন যে, যে কেউ ইসরায়েলি সেনার উপর হাত তোলার সাহস দেখাবে, তাকে অবশ্যই কঠোর ও দৃঢ় প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে হবে। ЦАХАЛ-এর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এই সামরিক অভিযানের সময় হামাসের সামরিক নেতৃত্বের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত ডজনখানেক গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হানা হয়। এই আক্রমণে কমান্ডিং পদে থাকা ৩০ জনেরও বেশি জঙ্গিকে নির্মূল করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

তবে, হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ এই ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং উদ্বেগজনক তথ্য উপস্থাপন করেছে। তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ৩৩ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন। আবার, অন্যান্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে মৃত্যুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি দেখানো হয়েছে—বলা হয়েছে যে রাতের বিমান হামলায় মোট ১০৪ জন নিহত হয়েছেন, যা কেবল সামরিক স্থাপনা নয়, বরং আবাসিক ভবন এবং স্কুলগুলিতেও আঘাত হেনেছিল বলে দাবি করা হয়েছে।

অন্যদিকে, হামাস তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি জোরালোভাবে অস্বীকার করেছে। তারা দাবি করেছে যে ইসরায়েলের এই প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের কারণ হতে পারে এমন কোনো ধরনের হামলায় তাদের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। তারা বিদ্যমান শান্তি চুক্তি কঠোরভাবে মেনে চলার উপর তাদের অবস্থান বজায় রেখেছে এবং অবিলম্বে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

এই সাম্প্রতিক সংঘাতের ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে যে এই অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার যেকোনো প্রচেষ্টার সাথে অন্তর্নিহিত গভীর রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা সবসময়ই বিদ্যমান থাকে। এর আগের যুদ্ধবিরতি, যা গত ১০ অক্টোবর কার্যকর হয়েছিল, সেটিও উভয় পক্ষের দ্বারা চুক্তি ভঙ্গের পারস্পরিক অভিযোগে জর্জরিত ছিল এবং বারবার ব্যাহত হচ্ছিল। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই নতুন করে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যেও, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকারকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছিলেন। তবে তিনি একই সাথে এই আস্থা প্রকাশ করেন যে যুদ্ধবিরতি ব্যবস্থাটি মোটের উপর এখনও কার্যকর রয়েছে এবং তা ভেঙে পড়েনি।

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।