ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকায় একটি নতুন সামরিক অভিযানের ঘোষণা দিয়েছেন, যা শীঘ্রই শুরু হবে এবং দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার হামাসকে নির্মূল এবং জিম্মিদের মুক্তির জন্য গাজা শহর নিয়ন্ত্রণের অনুমোদনের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, এই পদক্ষেপটি মানবিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলবে এবং বেসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগের কারণ হবে বলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ১০ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে ঘোষিত এই অভিযানের লক্ষ্য হলো গাজার অবশিষ্ট হামাস ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করা এবং জিম্মিদের উদ্ধার করা। নেতানিয়াহু বলেছেন যে ইসরায়েলের লক্ষ্য গাজা দখল করা নয়, বরং গাজাকে মুক্ত করা এবং একটি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা।
ইউরোপীয় দেশগুলো, সাহায্য সংস্থাগুলো এবং জাতিসংঘ এই ঘোষণার সমালোচনা করেছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি মানবিক সংকটকে আরও তীব্রতর করতে পারে এবং বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বাড়াতে পারে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে অনাহারে ২১২ জনের বেশি ফিলিস্তিনি মারা গেছেন, যার মধ্যে ৯৮ জন শিশু। অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে এ পর্যন্ত ৬১,০০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব মিরোস্লাভ ইয়েনচা বলেছেন যে এই নতুন পরিকল্পনা গাজায় "আরেকটি বিপর্যয়" ডেকে আনতে পারে এবং তিনি যুদ্ধবিরতি, জিম্মিদের মুক্তি এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য একটি রাজনৈতিক পথের আহ্বান জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, যার মধ্যে ইউরোপীয় দেশগুলো, সাহায্য সংস্থাগুলো এবং জাতিসংঘ রয়েছে, তারা এই নতুন সামরিক পরিকল্পনার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা সতর্ক করেছে যে এই অভিযান মানবিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারে। ফিলিস্তিনি এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা গাজা শহরে ইসরায়েলের পরিকল্পিত দখল সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, কারণ পূর্বের বেসামরিক হতাহতের ঘটনাগুলো তাদের এই সন্দেহের কারণ। সামরিক কর্মকর্তারাও এই সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন, কারণ এটি জিম্মি এবং সৈন্যদের জীবনকে বিপন্ন করতে পারে। এই সংঘাতের প্রেক্ষাপটে, ইসরায়েলি সরকার হামাসকে নির্মূল এবং জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করছে। তবে, বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা এবং মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। অনাহার এবং অপুষ্টির কারণে শিশুদের মৃত্যু এবং সাহায্য বিতরণের সময় হতাহতের ঘটনাগুলো এই অঞ্চলের চরম দুর্বলতাকে তুলে ধরেছে। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিবের যুদ্ধবিরতি এবং রাজনৈতিক সমাধানের আহ্বান এই সংঘাতের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রয়োজনীয়তাকে জোরদার করে।