ভেনেজুয়েলার উপকূলে মাদক পাচারকারী জাহাজে মার্কিন বাহিনীর পঞ্চম আঘাত: নিহত ছয়
সম্পাদনা করেছেন: Tatyana Hurynovich
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ১৪ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে ঘোষণা করেছেন যে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে মাদক পাচারের বিরুদ্ধে পরিচালিত সামরিক অভিযানে এটি ছিল পঞ্চম আঘাত। ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে একটি সন্দেহভাজন মাদক পাচারকারী জাহাজে এই আঘাত হানা হয়, যার ফলে ছয়জন কথিত মাদক সন্ত্রাসীর মৃত্যু হয়েছে। এই পদক্ষেপটি ট্রাম্প প্রশাসনের মাদক পাচার রোধের বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে।
এই নির্দিষ্ট অভিযানে ছয়জন সন্দেহভাজন মাদক সন্ত্রাসীর প্রাণহানি ঘটে, যার ফলে এই ধারাবাহিক আক্রমণে মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন, যেখানে একটি দ্রুতগামী নৌযান ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সম্পূর্ণ ধ্বংস হতে দেখা যায়। মার্কিন প্রশাসন নিশ্চিত করেছে যে জাহাজটি মাদক পাচারে জড়িত ছিল এবং এটি মাদক সন্ত্রাসবাদী নেটওয়ার্কগুলির সাথে যুক্ত ছিল। প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ এই সামরিক অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন।
এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে চলমান উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। মার্কিন প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে 'কার্টেল দে লস সোলেস' নামক একটি অপরাধী সংগঠনের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করে আসছে, যা মাদক পাচারে নিয়োজিত। এই সামরিক পদক্ষেপের প্রেক্ষাপটে, কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি স্পষ্ট। এর আগে, সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ, ট্রাম্প প্রশাসন মাদুরো সরকারের সাথে কূটনৈতিক যোগাযোগ স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছিল। এছাড়াও, অক্টোবর ২০২৫-এর শুরুর দিকে, ক্যারিবিয়ানে মাদক বোঝাই জাহাজ নিষ্ক্রিয় করার পর ট্রাম্প সতর্ক করেছিলেন যে ক্যারিবিয়ান সাগর এবং ভেনেজুয়েলার স্থলভাগের মাদক পাচার রুটের উপর নজরদারি তীব্র করা হবে।
এই সামরিক পদক্ষেপগুলি আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন তুলেছে। কিছু আইন বিশেষজ্ঞ এবং মানবাধিকার গোষ্ঠী এই ধরনের আক্রমণকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে দেখছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এই ধরনের ছোট নৌকায় আঘাত হানার নিন্দা জানিয়েছিলেন। অন্যদিকে, মার্কিন প্রশাসন এই হামলাগুলিকে মাদক পাচারকারী সংগঠনগুলিকে প্রতিহত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে, বিশেষত যখন তারা কিছু মাদক কার্টেলকে বিদেশী সন্ত্রাসী সংস্থা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মার্কিন প্রশাসন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে জাহাজটি মাদক পাচারে জড়িত ছিল, যা সামরিক পদক্ষেপকে ন্যায্য প্রতিপন্ন করে। অন্যদিকে, ভেনেজুয়েলার সরকার এই অভিযোগগুলিকে ওয়াশিংটন কর্তৃক সরকার পরিবর্তনের উস্কানি হিসেবে দেখছে। এই ধরনের সামরিক কার্যকলাপ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বিপজ্জনক সংকেত বহন করে, যেখানে কূটনৈতিক সংলাপের পথ প্রায় বন্ধ। এই পরিস্থিতি বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক ক্ষমতার ভারসাম্যের প্রতিফলন ঘটাচ্ছে।
উৎসসমূহ
Deutsche Welle
El País
El Universal
Vanguardia
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
