দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি Jae Myung জাপানে এক গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সফরে পৌঁছেছেন। এই সফরটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনের প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার একটি প্রচেষ্টা। ২৩শে আগস্ট, ২০২৫ তারিখে টোকিওতে অবতরণের পর, প্রেসিডেন্ট লি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন। এই সফরটি ২৫শে আগস্ট, ২০২৫ তারিখে ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট লি-এর নির্ধারিত শীর্ষ সম্মেলনের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
আলোচনার মূল বিষয়গুলির মধ্যে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ত্রিমুখী নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি, চীনের ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক প্রভাব মোকাবিলা এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন troops মোতায়েনের জন্য আর্থিক অবদান। উভয় দেশই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়েও আলোচনা করছে, যার মধ্যে একটি ১৫% শুল্ক হার অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। এই বাণিজ্য চুক্তিটি দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষ করে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির ৫৬ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত থাকার প্রেক্ষাপটে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এই কূটনৈতিক আলোচনায় একটি বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে। জাপান-কোরিয়া সম্পর্ক অতীতে ঔপনিবেশিক ইতিহাস এবং যুদ্ধকালীন ন্যায়বিচার নিয়ে উত্তেজনার সম্মুখীন হয়েছে। তবে, প্রেসিডেন্ট লি জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, এবং প্রধানমন্ত্রী ইশিবা যুদ্ধকালীন ঘটনাবলী নিয়ে অনুতাপ প্রকাশ করেছেন, যা ২০১৩ সালের পর থেকে জাপানি নেতাদের বক্তৃতায় একটি বিরল সংযোজন। এই ঐতিহাসিক সংবেদনশীলতা এবং ভবিষ্যতের সহযোগিতার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা বর্তমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতে, প্রেসিডেন্ট লি চীনের প্রভাব এবং উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি সহ গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করবেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ২৮,৫০০ মার্কিন troops মোতায়েনের জন্য দেশটির আর্থিক অবদান একটি প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে, কারণ মার্কিন প্রশাসন এই বিষয়ে তাদের অংশগ্রহণের উপর জোর দিয়েছে। বাণিজ্য চুক্তি, বিশেষ করে মার্কিন আমদানির উপর ১৫% শুল্ক, এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বাস্তব এবং সম্ভাব্য বিতর্কিত দিকগুলি তুলে ধরে।
এই কূটনৈতিক উদ্যোগগুলি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং অভিন্ন নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে জোট জোরদার করার গুরুত্ব তুলে ধরে। প্রেসিডেন্ট লি-এর জাপান সফর এবং তারপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শীর্ষ সম্মেলন, আঞ্চলিক গতিপ্রকৃতির মধ্যে জোটবদ্ধতা সুসংহত করার একটি স্পষ্ট কৌশল প্রদর্শন করে। বাণিজ্য এবং শুল্কের মতো বিষয়গুলি বর্তমান অর্থনৈতিক নীতি আলোচনার প্রতিফলন ঘটায়। এই জটিল সম্পর্কগুলি, বিশেষ করে ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে, পূর্ব এশিয়ার নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। জুন মাসে কানাডায় অনুষ্ঠিত জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে লি এবং ইশিবার পূর্ববর্তী সাক্ষাৎ, ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি এবং সহযোগিতামূলক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দেয়।