ভিয়েতনামের জাতীয় ক্রেডিট ইনফরমেশন সেন্টার (CIC) একটি বড় ধরনের সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছে, যা দেশের লক্ষ লক্ষ নাগরিকের ব্যক্তিগত ও আর্থিক তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ShinyHunters নামে পরিচিত একটি হ্যাকার গোষ্ঠী এই হামলার জন্য নিজেদের দায়ী করেছে। এই ঘটনাটি ২০২৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়।
ভিয়েতনামের স্টেট ব্যাংক দ্বারা পরিচালিত CIC, যা দেশের ক্রেডিট তথ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ এবং বিশ্লেষণের জন্য দায়ী, সেটিই এই সাইবার আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল। ভিয়েতনামের সাইবার ইমার্জেন্সি রেসপন্স সেন্টার (VNCERT) প্রাথমিক তদন্তে ব্যক্তিগত তথ্য চুরির উদ্দেশ্যে পরিচালিত এই সাইবার অপরাধের লক্ষণ দেখতে পেয়েছে। ShinyHunters দাবি করেছে যে তারা ১৬০ মিলিয়নেরও বেশি রেকর্ড হাতিয়ে নিয়েছে, যার মধ্যে অত্যন্ত সংবেদনশীল তথ্যও রয়েছে।
এই ঘটনাটি ভিয়েতনামের আর্থিক খাতের উপর ক্রমবর্ধমান সাইবার হুমকির একটি স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরেছে। ভিয়েটেল সাইবার সিকিউরিটি রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, ভিয়েতনামে ১৪.৫ মিলিয়ন অ্যাকাউন্ট ফাঁস হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী ডেটা ফাঁসের ১২%। দেশের মোট সাইবার আক্রমণের ৭১% আর্থিক খাতের দিকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়। ShinyHunters গোষ্ঠীটি ২০২০ সাল থেকে তাদের কার্যকলাপের জন্য পরিচিত এবং তারা Google, Microsoft, এবং Qantas-এর মতো বড় কর্পোরেশনগুলিকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে। তাদের কাজের পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে ফিশিং স্কিম, অসুরক্ষিত ক্লাউড স্টোরেজ ব্যবহার এবং GitHub রিপোজিটরি থেকে দুর্বলতা খুঁজে বের করা। এই ধরনের আক্রমণগুলি প্রায়শই ডেটা বিক্রি বা ফাঁস করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে করা হয়।
এই ঘটনাটি ভিয়েতনামের জাতীয় অবকাঠামোর নিরাপত্তা এবং লক্ষ লক্ষ নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার বিষয়ে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। VNCERT এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং ডেটা সুরক্ষার জন্য প্রযুক্তিগত ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। তবে, এই ঘটনাটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোর মধ্যে একটি পদ্ধতিগত দুর্বলতা নির্দেশ করে, যার জন্য সাইবার নিরাপত্তা প্রোটোকল এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি ব্যাপক পর্যালোচনা এবং উল্লেখযোগ্য আপগ্রেড প্রয়োজন। এই ধরনের ঘটনাগুলি কেবল ব্যক্তিগত তথ্যের জন্যই নয়, বরং জাতীয় অর্থনীতি এবং সাধারণ মানুষের আস্থার জন্যও একটি বড় হুমকি। এই পরিস্থিতিতে, সকলেরই সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং নিজেদের তথ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।