মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠে সাশ্রয়ী অনুসন্ধানের জন্য টাম্বলউইড রোভার নামক গোলাকার রোবটগুলি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে। এই রোবটগুলি মঙ্গল গ্রহের বাতাস দ্বারা চালিত হয় এবং বর্তমানে এর পৃষ্ঠের বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে তথ্য সংগ্রহের ক্ষমতা নিশ্চিত করেছে।
২০২৫ সালের জুলাই মাসে, টিম টাম্বলউইড আয়ার্স ইউনিভার্সিটির প্ল্যানেটারি এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটিতে এক সপ্তাহব্যাপী পরীক্ষা চালায়। এই পরীক্ষাগুলিতে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশের অনুকরণে ১৭ মিলibar বায়ুমণ্ডলীয় চাপে ৩০ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার ব্যাসের প্রোটোটাইপ ব্যবহার করা হয়েছিল। ৯-১০ মিটার/সেকেন্ড বেগে বাতাস এই রোবটগুলিকে বিভিন্ন ধরণের ভূখণ্ডের উপর দিয়ে সফলভাবে চালিত করতে সক্ষম হয়েছে। পরীক্ষার সময় রোবটগুলির অনবোর্ড যন্ত্রগুলি ডেটা রেকর্ড করেছে এবং তাদের গতিবিধি তরল-গতিবিদ্যার মডেলিংয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল, যা পূর্ববর্তী সিমুলেশনগুলিকে নিশ্চিত করেছে। এই পরীক্ষাগুলি মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠ জুড়ে ব্যাপক ডেটা সংগ্রহের সম্ভাবনাকে দৃঢ়ভাবে প্রমাণ করে।
এর আগে, ২০২৫ সালের এপ্রিলে, নেদারল্যান্ডসের মাস্ট্রিচটের একটি নিষ্ক্রিয় খনিতে ২.৭ মিটার ব্যাসের একটি প্রোটোটাইপ, টাম্বলউইড সায়েন্স টেস্টবেড, মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষা করা হয়েছিল। এই প্রোটোটাইপটিতে একটি ক্যামেরা, ম্যাগনেটোমিটার, ইনার্শিয়াল মেজারমেন্ট ইউনিট এবং জিপিএস সহ সাধারণ সেন্সর লাগানো ছিল। এই পরীক্ষাগুলি প্রমাণ করেছে যে রোবটগুলি প্রাকৃতিক ভূখণ্ডের উপর দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে রিয়েল-টাইমে পরিবেশগত ডেটা সংগ্রহ এবং প্রক্রিয়া করতে সক্ষম।
ভবিষ্যতে, ২০২৫ সালের নভেম্বরে চিলির আটাকামা মরুভূমিতে আরও ফিল্ড ক্যাম্পেইনের পরিকল্পনা রয়েছে। এই অভিযানে অন্তত দুটি সায়েন্স টেস্টবেড রোভার বাহ্যিক অংশীদারদের কাছ থেকে যন্ত্রাংশ বহন করবে এবং সোয়ার্ম সমন্বয় কৌশল পরীক্ষা করবে। টাম্বলউইড রোভার প্রযুক্তির এই উন্নয়নগুলি মঙ্গল গ্রহের বিশাল আকারের, সাশ্রয়ী অনুসন্ধানের একটি বাস্তবসম্মত পথ খুলে দিয়েছে। এগুলি গ্রহটির পৃষ্ঠ এবং বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই রোবটগুলি কেবল ডেটা সংগ্রহেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং দীর্ঘমেয়াদী পর্যবেক্ষণের জন্য স্থায়ী পরিমাপ কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনাও রাখে, যা ভবিষ্যতের মিশনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো তৈরি করতে পারে। এই প্রযুক্তি মঙ্গল গ্রহের মতো দূরবর্তী স্থানে অনুসন্ধানের ব্যয় বহুলাংশে কমাতে সাহায্য করবে, যা পূর্বে কেবল বড় এবং ব্যয়বহুল মিশনের মাধ্যমেই সম্ভব ছিল। এই উদ্ভাবনী পদ্ধতিটি মহাকাশ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে একটি নতুন যুগের সূচনা করতে পারে, যেখানে কম খরচে অধিক তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।