গবেষণার নতুন দিগন্ত: ব্লু অরিজিনের নিউ গ্লেন রকেটের নাসা ESCAPADE মঙ্গল অভিযান স্থগিত

সম্পাদনা করেছেন: Tetiana Martynovska 17

New Glenn-এর দ্বিতীয় উড়ান NASA-er জুটি ESCAPADE প্রোবগুলিকে মঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়, একটি launch-and-loiter প্রোফাইল ব্যবহার করে.

ব্লু অরিজিন কোম্পানির নিউ গ্লেন রকেটের বহু প্রতীক্ষিত উৎক্ষেপণ, যা ৯ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে হওয়ার কথা ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে। ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস স্টেশনে চলমান প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। উল্লেখ্য, মঙ্গল গ্রহকে লক্ষ্য করে নাসা-র ESCAPADE (Escape and Plasma Acceleration and Dynamics Explorers) মিশনের এই উৎক্ষেপণটি রকেট-লঞ্চারের প্রযুক্তিগত প্রস্তুতির অভাবের কারণে অক্টোবর ২০২৪ থেকেই পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

ESCAPADE মিশন লঞ্চ হচ্ছে!

৯ নভেম্বর, রবিবার, উৎক্ষেপণ বাতিল হওয়ার পর ব্লু অরিজিন কর্তৃপক্ষ নতুন একটি সময়সূচি ঘোষণা করেছে। তারা জানিয়েছে, উৎক্ষেপণটি ১২ নভেম্বর, বুধবারের আগে কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। নতুন উৎক্ষেপণের সময়সীমা হলো ইস্টার্ন টাইম অনুযায়ী দুপুর ২:৫০ মিনিট থেকে বিকেল ৪:১৭ মিনিটের মধ্যে। এই অভিযানটি ব্লু অরিজিনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা তাদের বাণিজ্যিক মহাকাশ যাত্রার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ধাপের সূচনা করবে।

রকেট: New Glenn-এর দ্বিতীয় উড়ান। উচ্চতা 98 মিটার।

নিউ গ্লেন রকেটে ESCAPADE মিশনের জন্য দুটি অভিন্ন মহাকাশযান বহন করা হচ্ছে। এই প্রোব দুটির নাম রাখা হয়েছে 'ব্লু' এবং 'গোল্ড', যা ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে-র প্রতীকী রঙের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। এই যুগলের প্রধান বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্য হলো গভীরভাবে অনুসন্ধান করা যে কীভাবে মঙ্গল গ্রহ কোটি কোটি বছর ধরে তার ঘন বায়ুমণ্ডল হারিয়ে ফেলেছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, সৌর বাতাসের (solar wind) সাথে গ্রহটির মিথস্ক্রিয়া এই বায়ুমণ্ডল ক্ষয়ের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করেছিল। ESCAPADE মিশনটি নাসা-র SIMPLEx কর্মসূচির অধীনে পরিচালিত হচ্ছে, যার লক্ষ্য হলো কম খরচে কার্যকর গ্রহ সংক্রান্ত গবেষণা সম্পন্ন করা। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে-র স্পেস সায়েন্সেস ল্যাবরেটরি এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ডঃ রবার্ট লিলিস।

মহাকাশযান দুটির প্রতিটির ওজন প্রায় ৫৩৫ কেজি। তারা মহাকাশে একটি গতানুগতিক পথ অনুসরণ করবে না। প্রথমে তারা পৃথিবী-সূর্য L2 ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্টের দিকে যাত্রা করবে এবং সেখানে প্রায় এক বছর অবস্থান করবে। এরপর, তারা পৃথিবীর কাছাকাছি একটি মহাকর্ষীয় কৌশল (gravity assist maneuver) ব্যবহার করে গতি সঞ্চয় করে মঙ্গলের দিকে তাদের চূড়ান্ত যাত্রা শুরু করবে। হোম্যান ট্রান্সফার অরবিটের মতো প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় এই বিশেষ রুটটি ভবিষ্যতের মহাকাশযানগুলির জন্য দুই বছরের সংকীর্ণ উৎক্ষেপণ উইন্ডোর উপর নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করবে। মহাকাশযানগুলি ২০২৭ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে মঙ্গলের কক্ষপথে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ESCAPADE একটি যুগান্তকারী মিশন কারণ এটিই প্রথম অভিযান যেখানে অন্য একটি গ্রহের পরিবেশ অধ্যয়নের জন্য দুটি উপগ্রহ ব্যবহার করা হচ্ছে, যা মঙ্গলের ম্যাগনেটোস্ফিয়ারের একটি অভূতপূর্ব স্টেরিওস্কোপিক চিত্র প্রদান করবে।

ব্লু অরিজিনের জন্য এটি নিউ গ্লেন রকেটের দ্বিতীয় উড়ান হিসেবে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। এই রকেটের প্রথম উড়ানটি ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে হয়েছিল, যদিও সেই সময় প্রথম ধাপটি সফলভাবে অবতরণের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। এই উৎক্ষেপণটি সফল হলে, যা ViaSat-এর জন্য একটি যোগাযোগ প্রদর্শন পরীক্ষাও বহন করছে, তা বাণিজ্যিক উৎক্ষেপণ বাজারে কোম্পানির অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। প্রায় ৯৭.৫ মিটার উচ্চতার এই রকেটটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে এর প্রথম ধাপটি পুনরায় ব্যবহার করা যায়। এই প্রথম ধাপটিকে জ্যাকলিন (Jacklyn) নামক একটি স্বায়ত্তশাসিত প্ল্যাটফর্মে অবতরণ করানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

উৎসসমূহ

  • CNN International

  • CNN

  • NASA Science

  • Friends of NASA

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।