চীনের আই-স্পেস উন্মোচন করছে পুনঃব্যবহারযোগ্য রকেট প্রযুক্তি, লক্ষ্য ২০২৫ সালে উৎক্ষেপণ

সম্পাদনা করেছেন: Tetiana Martynovska 17

চীনের বেসরকারি মহাকাশ সংস্থা আই-স্পেস (i-Space) তাদের অত্যাধুনিক পুনঃব্যবহারযোগ্য রকেট প্রযুক্তি উন্মোচন করেছে, যা মহাকাশ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এই অগ্রগতির মাধ্যমে, চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে এই গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি আয়ত্ত করেছে। সংস্থাটি তাদের "জিংজি গুইহাং" (Xingji Guihang) নামক একটি বিশেষ সামুদ্রিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, যা উৎক্ষেপণের পর রকেটের প্রথম পর্যায়টিকে সমুদ্রে নিরাপদে পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম। এই প্রযুক্তি মহাকাশ মিশনের ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে এবং নিয়মিত বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম, যেমন টেলিস্কোপ, আন্তঃগ্রহ প্রোব এবং ছোট উপগ্রহগুলির উৎক্ষেপণকে আরও সহজলভ্য করে তুলবে। "জিংজি গুইহাং" প্ল্যাটফর্মটি প্রায় ১০০ মিটার দীর্ঘ এবং ৪২ মিটার প্রশস্ত, যার পুনরুদ্ধার ডেক ৪০x৬০ মিটার আকারের। এটি একটি ডিপি২ (DP2) ক্লাস ডাইনামিক পজিশনিং সিস্টেম দ্বারা সজ্জিত, যা রকেট পুনরুদ্ধারের সময় নির্ভুল অবস্থান নিশ্চিত করে।

এই প্ল্যাটফর্মটি মূলত আই-স্পেসের এসকিউএক্স-৩ (SQX-3) রকেট, যা "হাইপারবোলা-৩" (Hyperbola-3) নামেও পরিচিত, তার প্রথম পর্যায়ের পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যবহৃত হবে। সংস্থাটি ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ এসকিউএক্স-৩ রকেটের উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে এবং শীতকালে রকেটটি হাইনান প্রদেশে পৌঁছাবে সমুদ্র পুনরুদ্ধার পরীক্ষার জন্য। পুনঃব্যবহারযোগ্য রকেট প্রযুক্তির মূল সুবিধা হলো উৎক্ষেপণ ব্যয় হ্রাস করা। যেখানে ঐতিহ্যবাহী রকেটগুলি একবার ব্যবহারের পর বাতিল করা হয়, সেখানে পুনঃব্যবহারযোগ্য রকেটগুলি বারবার ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি প্রতিটি মিশনের খরচকে ১০ গুণ বা তার বেশি কমাতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, স্পেসএক্স (SpaceX)-এর ফ্যালকন ৯ (Falcon 9) রকেটের একটি ফ্লাইটের খরচ প্রায় ৬০ মিলিয়ন ডলার, যেখানে অন্যান্য ডিসপোজেবল রকেটের খরচ ২০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি হতে পারে। এই সাশ্রয়ী প্রযুক্তি মহাকাশ পর্যটন, উপগ্রহ স্থাপন এবং গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানের মতো নতুন বাণিজ্যিক কার্যক্রমের দ্বার উন্মোচন করবে। আই-স্পেসের এই প্রচেষ্টা চীনের মহাকাশ কর্মসূচির উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং বিশ্বব্যাপী মহাকাশ প্রতিযোগিতায় তাদের অবস্থান শক্তিশালী করার একটি অংশ। এই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি কেবল ব্যয় সাশ্রয়ই করবে না, বরং মিশনের সময়োপযোগী ডেলিভারি, নতুন সরঞ্জামের পরীক্ষা এবং অরবিটাল অবজারভেটরিগুলির দ্রুত আপডেটের সুযোগও তৈরি করবে। পাশাপাশি, চীনের "তিয়াংগং" (Tiangong) মহাকাশ স্টেশনটি মডিউলার ল্যাবরেটরি হিসেবে কাজ করে চলেছে, যেখানে নভোচারীরা বিভিন্ন মাইক্রোগ্রাভিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন এবং ভবিষ্যতের উচ্চাভিলাষী মিশনের জন্য ভিত্তি স্থাপন করছেন। এই সমন্বিত প্রচেষ্টা মহাকাশ অনুসন্ধানের নতুন যুগের সূচনা করবে, যেখানে উদ্ভাবন এবং আবিষ্কারের সুযোগ আরও প্রসারিত হবে।

উৎসসমূহ

  • Universe Space Tech

  • Global Times

  • iXBT Live

  • DAY TODAY

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।

চীনের আই-স্পেস উন্মোচন করছে পুনঃব্যবহারযোগ... | Gaya One