টেক্সাসের পশ্চিম প্রান্ত থেকে ২৩শে আগস্ট, ২০২৫ তারিখে ব্লু অরিজিন তাদের নিউ শেপার্ড রকেটের ৩৫তম মিশন, NS-35, সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে। এই মানববিহীন সাবঅরবিটাল ফ্লাইটটি প্রায় ৪০টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক ও গবেষণা পেলোড বহন করে, যা নিউ শেপার্ড দ্বারা উৎক্ষেপিত মোট পেলোডের সংখ্যা ২০০-তে পৌঁছেছে। এই মিশনের লক্ষ্য মহাকাশ গবেষণা ও শিক্ষাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
এই মিশনে নাসা-র টেকরাইজ স্টুডেন্ট চ্যালেঞ্জের ২৪টি পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা মূলত মাইক্রোগ্রাভিটিতে উদ্ভিদের চাষ এবং তরল পদার্থের পদার্থবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করে। এছাড়াও, টিচার্স ইন স্পেস প্রোগ্রাম (Teachers in Space program) থেকে শিক্ষকদের ডিজাইন করা পরীক্ষাগুলিও ছিল, যা মহাকাশ যাত্রার সময় শব্দ মাত্রা, বিকিরণ এবং পরিবেশগত অবস্থা সম্পর্কে ডেটা সংগ্রহ করবে।
মিশনটিতে আর.জি. ওয়েলস (RSS H.G. Wells) ক্যাপসুল এবং সর্বশেষ নিউ শেপার্ড বুস্টার ব্যবহার করা হয়েছিল, উভয়ই সফলভাবে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। বুস্টারটি একটি প্রপালসিভ ল্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে অবতরণ করে এবং ক্যাপসুলটি প্যারাসুটের সাহায্যে নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসে। উল্লেখযোগ্য পরীক্ষাগুলির মধ্যে ছিল এ.আর.ই.এস. (A.R.E.S.) পেলোড, যা ৪৩২টি সেন্সর ব্যবহার করে মাইক্রোগ্রাভিটিতে রাসায়নিক আবরণ নিয়ে গবেষণা করেছে। ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োলজিক্যাল ইমেজিং ইন সাপোর্ট অফ সাবঅরবিটাল সায়েন্স (BISS) প্রকল্পটি আইএসএস (ISS) প্রযুক্তির সাবঅরবিটাল ব্যবহারের জন্য অভিযোজিত হয়েছে, যা জৈবিক প্রতিক্রিয়াগুলি বুঝতে সাহায্য করবে।
ব্লু অরিজিন-এর অলাভজনক সংস্থা, ক্লাব ফর দ্য ফিউচার (Club for the Future), হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের আঁকা পোস্টকার্ডও মহাকাশে পাঠিয়েছে। এই পোস্টকার্ডগুলি মহাকাশে পৌঁছেছে এবং ফিরে আসার পর সেগুলিতে 'মহাকাশে উড়েছে' (flown to space) এমন একটি স্ট্যাম্প লাগানো হয়েছে। এই উদ্যোগটি পরবর্তী প্রজন্মকে মহাকাশ যাত্রার প্রতি উৎসাহিত করার একটি প্রয়াস।
এই মিশনটি মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা নতুন প্রজন্মের বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের জন্য অনুপ্রেরণা যোগাবে। টেকরাইজ স্টুডেন্ট চ্যালেঞ্জের মতো প্রোগ্রামগুলি শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে মহাকাশ গবেষণার অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়তা করে, যা তাদের STEM (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিত) শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তোলে। টিচার্স ইন স্পেস প্রোগ্রামও শিক্ষকদের মহাকাশ বিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন এবং তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। এই ধরনের উদ্যোগগুলি মহাকাশ অনুসন্ধানের ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে।