কুইংডাও-এর আল্ট্রা জিরো-কার্বন ভবন: টেকসই স্থাপত্যের নতুন দিগন্ত

সম্পাদনা করেছেন: an_lymons

চীনের শানডং প্রদেশের কুইংডাও শহরে বিশ্বের প্রথম আল্ট্রা জিরো-কার্বন ভবনটি উন্মোচন করা হয়েছে, যা পরিবেশ-বান্ধব স্থাপত্যের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক স্থাপন করেছে। ১১৭ মিটার উচ্চতা এবং ২৩ তলা বিশিষ্ট এই অত্যাধুনিক ভবনটি প্রতিদিন প্রায় ৬,০০০ কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এবং সম্পূর্ণভাবে সবুজ শক্তির উপর নির্ভর করে পরিচালিত হয়।

এই ভবনের পূর্ব, দক্ষিণ এবং পশ্চিম দিকে বিল্ডিং-ইন্টিগ্রেটেড ফটোভোলটাইক (BIPV) গ্লাস কার্টেন ওয়াল ব্যবহার করা হয়েছে। এই স্বচ্ছ সৌর প্যানেলগুলি সরাসরি ডিসি বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, যা ভবনের দৈনিক শক্তির প্রায় ২৫% সরবরাহ করে এবং বার্ষিক প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ হ্রাস করে। এই প্রযুক্তি কেবল শক্তি উৎপাদনই করে না, বরং ভবনের নান্দনিকতা বৃদ্ধি করে এবং প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের সুযোগ তৈরি করে, যা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে শক্তি সাশ্রয়ে সহায়ক হয়।

শক্তি সঞ্চয়ের জন্য, ভবনটিতে ১৪টি অব্যবহৃত বৈদ্যুতিক গাড়ির (EV) ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। এই সেকেন্ড-লাইফ ব্যাটারিগুলি দিনের বেলায় উৎপাদিত অতিরিক্ত সৌর শক্তি অথবা অফ-পিক সময়ে গ্রিড থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে (প্রায় ০.২২ ইউয়ান প্রতি কিলোওয়াট-ঘণ্টা) বিদ্যুৎ সঞ্চয় করে। এই সঞ্চিত শক্তি পরবর্তীতে পিক আওয়ার বা কম সূর্যালোকের সময় ব্যবহার করা হয়, যা একটি সুষম ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করে। এই পদ্ধতি বর্জ্য হ্রাস করার পাশাপাশি বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারির পুনর্ব্যবহারের একটি কার্যকর মডেলও প্রদর্শন করে।

ভবনের কার্যক্রমকে আরও উন্নত করতে প্রায় ২৪,০০০ মাইক্রো-সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে, যা প্রচলিত সুইচগুলির পরিবর্তে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আলো, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং লিফট পরিচালনা করে। টেল্ড নিউ এনার্জির চেয়ারম্যান ইউ ডেক্সিয়াং-এর মতে, সবুজ বিদ্যুৎ ব্যবহার করে বার্ষিক প্রায় ২,৫০০ টন কার্বন নিঃসরণ কমানো সম্ভব। ডিজিটালাইজেশন বিনিয়োগের খরচ ২০-৩০% কমিয়েছে, পরিচালন দক্ষতা ৩০% বৃদ্ধি করেছে এবং শক্তি খরচ প্রায় ৩০% হ্রাস করেছে। এই উদ্ভাবনী ভবনটি অত্যাধুনিক স্থাপত্য এবং নবায়নযোগ্য শক্তির সমন্বয়ের একটি চমৎকার উদাহরণ, যা টেকসই শহুরে উন্নয়নের জন্য একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে।

উৎসসমূহ

  • news.cgtn.com

  • World’s first ultra-tier zero-carbon building inaugurated in East China’s Shandong

  • First ultra-zero carbon facility debuts

  • China unveils world's first zero-carbon tower with 24,000 sensors

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।