প্রযুক্তি খাতের চার শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান—অস্ট্রেলিয়ার লেকবা গ্রুপ, নাইজেরিয়ার নেক্সট ডিজিটাল, সংযুক্ত আরব আমিরাতের অ্যাক্সলানএক্স এবং নেদারল্যান্ডসের এজেন্টিক ডাইনামিক—যৌথভাবে আফ্রিকএআই (AfricAI) নামে একটি নতুন উদ্যোগ চালু করেছে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো আফ্রিকার বাজারের জন্য বিশেষভাবে তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সমাধান তৈরি ও স্থাপন করা। আগস্ট ২০২৫-এ স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারকের (MoU) মাধ্যমে এই অংশীদারিত্ব আনুষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে।
আফ্রিকএআই প্রাথমিকভাবে নাইজেরিয়াকে তার প্রধান বাজার হিসেবে ব্যবহার করবে। বিদ্যমান ডেটা সেন্টার এবং এজ অবকাঠামো ব্যবহার করে স্বাস্থ্যসেবা, ডিজিটাল পরিচয়, নথি অটোমেশন, সরকারি প্রশাসন এবং ব্যবসায়িক পরিষেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে এআই অ্যাপ্লিকেশন সরবরাহ করা হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আফ্রিকা কেবল এআই-এর গ্রাহক হিসেবে নয়, বরং সার্বভৌম, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং স্থানীয় চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এআই ইকোসিস্টেমের সক্রিয় বিকাশকারী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।
আফ্রিকএআই-এর কৌশলগত উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে রয়েছে স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণের জন্য সার্বভৌম এআই অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা, মডুলার, এজেন্ট-ভিত্তিক এআই আর্কিটেকচার একীভূত করা এবং এআই প্রতিভার বিকাশের জন্য একটি এক্সেলেন্স সেন্টার (Centre of Excellence) স্থাপন করা। আঞ্চলিক ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব শক্তিশালী করার জন্য কমপ্লায়েন্স ফ্রেমওয়ার্ক এবং বহুভাষিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করাও একটি প্রধান লক্ষ্য। ২০২৬ সালের মধ্যে ঘানা, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং রুয়ান্ডাতেও এর কার্যক্রম সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।
নেক্সট ডিজিটালের চেয়ারম্যান প্রিন্স মালিক অ্যাডো-ইব্রাহিম স্থানীয় প্রাসঙ্গিকতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন, যেখানে লেকবা গ্রুপের সিইও জিউসেপ্পে পোরচেলি নাইজেরিয়াকে একটি আদর্শ লঞ্চপ্যাড হিসেবে দেখছেন। অ্যাক্সলানএক্স-এর ডেমेट্রিও রুসো আফ্রিকার ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব এজেন্ডার সঙ্গে সামঞ্জস্যের উপর জোর দিয়েছেন এবং এজেন্টিক ডাইনামিকের এরেন সিভাসলি তাদের এজেন্ট-ভিত্তিক আর্কিটেকচার সহযোগিতামূলকভাবে প্রয়োগ করতে আগ্রহী। এই উদ্যোগটি আফ্রিকার এআই সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক ডিজিটাল অবকাঠামোকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। আফ্রিকএআই এমন এআই সমাধান তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা স্থানীয়ভাবে তৈরি এবং মহাদেশের অনন্য প্রয়োজনীয়তা অনুসারে বিশেষভাবে তৈরি। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে, আফ্রিকার প্রযুক্তি খাত একটি নতুন যুগে প্রবেশ করছে, যেখানে উদ্ভাবন এবং সার্বভৌমত্ব একে অপরের পরিপূরক।